দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

প্রকৃতির রোষানলে কোণঠাসা সুন্দরবন

May 29, 2020 | 2 min read

নদীর ভাঙাগড়ার খেয়ালে ভিটেমাটি হারিয়ে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাতে হয় ‘আঠারো ভাটির দেশের’ বাসিন্দাদের। আম্পান আঘাত হানার পরেই সেই পরিস্থিতি গোটা সুন্দরবন জুড়ে। বিপদ বাড়িয়েছে বুধবারের কালবৈশাখীও। এরপর আশঙ্কা জুন মাসের তিন তারিখের কোটাল।

প্রকৃতির রোষানলে পড়ে এবার ত্রাণ শিবিরে বাস করতে হচ্ছে সুন্দরবনের কয়েক হাজার মানুষকে। ঘূর্ণিঝড়ের ঝাপটায় গোমর নদীর জল অশান্ত হয়ে ওঠে মাটির নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত করে দিয়েছিল গোসাবার রাঙাবেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর রাঙাবেলিয়া গ্রামকে।

গঙ্গা মন্দিরের কাছে বাঁধ ভেঙে নদীর নোনাজল গ্রামে ঢুকতে থাকায় গ্রামের বাসিন্দারা ঝড়ের মধ্যে প্রাণ বাঁচাতে পরিবার-পরিজনকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন রাঙাবেলিয়া প্রাইমারি স্কুল ও পুরনো হাইস্কুলের ভবনে। ঘূর্ণিঝড়ের অভিঘাত এবং বাঁধ-ভাঙা প্লাবনে ভিটেহারা হয়েছে এলাকার ৫১০টি পরিবার।

নোনা জল জটিরামপুর, বাগবাগান এমনকী গোসাবা তিন নম্বর গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে যায়। স্কুলবাড়িতে আশ্রয় নেওয়া স্থানীয় বধূ স্বপ্না মণ্ডল, ভগবতী মন্ডল, পার্বতী শিটদের মন পড়ে জলমগ্ন ভিটেয়। তাই রোজ ভোরের আলো ফুটতেই কোথাও কোমরসমান আবার কোথাও এক গলা জলের মধ্যে দিয়ে গিয়ে দেখে আসছেন ঘরদোরের অবস্থা। অধিকাংশই মাটির বাড়ি হয় ভেঙে পড়ছে অথবা যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়ার উপক্রম।

অনেকেই সেদিন বাড়িতে মজুদ রাখা চাষের চাল কিংবা অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী নিয়ে আসার সময় পাননি স্কুলবাড়িতে। তবে বাড়ির গোরু-ছাগলদের গোয়ালঘর থেকে বার করে দিয়েছিলেন, যাতে জলের ডুবে মারা না-যায়। এক সপ্তাহ ধরে গোমর নদীর জলে একইভাবেই জোয়ার-ভাটা খেলছে। কবে নদীর জমা জল গ্রাম থেকে বেরোবে তা নিয়ে সন্দিহান সকলে। এরই মধ্যে নোনা জলে পচতে শুরু করেছে পুকুরের মাছ ও সব্জি।

গোসাবা ব্লক প্রশাসনের তরফে অবশ্য গঙ্গামন্দির সংলগ্ন নদীর ভাঙা বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে। পাশাপাশি,প্রশাসনের তরফে চলছে দুর্গতদের ত্রাণ বণ্টনের কাজ। সামনে পূর্ণিমার কোটাল। তার পরেই বর্ষাকাল। ফলে একরাশ দুশ্চিন্তা। ক্যানিং-১ নম্বর ব্লকের নিকারীঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মাতলা নদীর বাঁধে একশো দিনের কাজে মহিলা শ্রমিকদেরকে দিয়ে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Sunderban, #sundarban, #sundarbans, #amphan, #Cyclone Amphan, #Amphan Super Cyclone, #amphan aftermath

আরো দেখুন