বিনোদন বিভাগে ফিরে যান

ঋতুপর্ণর ছবিতে রবীন্দ্রসঙ্গীত

May 30, 2020 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সত্যজিৎ পরবর্তী বাংলা চলচ্চিত্রের মানচিত্রে সবচেয়ে প্রতিভাশালী পরিচালক হিসাবে চিহ্নিত করা হয় তাঁকে। তিনি ছিলেন সত্যজিতের যোগ্য উত্তরসূরী। নয়ের দশকে ঋতুপর্ণ ঘোষের হাত ধরেই আবার উত্থান হয়েছিল বাংলা ছবির।

সত্যজিতের মতই ঋতুপর্ণের চলচ্চিত্র ভাবনার একটা বড় অংশ জুড়ে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত বেশীরভাগ ছবিতেই ব্যবহৃত হয়েছে রবীন্দ্রসঙ্গীত। কবিগুরুর স্পর্শ থেকে কোনওদিনই অধরা থাকেনি ঋতুপর্ণর সৃষ্টি। 

‘জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে’ (শুভ মহরৎ )

রাখি গুলজার,শর্মিলা ঠাকুর,নন্দিতা দাস অভিনীত এই ছবির শেষের দিকে রবীন্দ্রনাথের এই গান যে প্রভাব বিস্তার করেছিল সত্যি দুর্লভ। মনোময়ের কন্ঠে কোনওরকম বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গত ছাড়াই এই গান অংশ হয়ে উঠেছিল শুভ মহরতের।

‘তরী আমার’ (নৌকাডুবি)

২০১১ সালে মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি। নৌকাডুবির নামের কথা মাথায় রাখলে ছবিতে তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়ের ব্যবহার খুব বেশী চমকপ্রদ মনে হয় না। কিন্তু থিমের কথা ভেবে ‘যে রাতে মোর…’ এই গানের ব্যবহার সত্যি অনবদ্য। ছবিতে ‘তোমারও অসীমে’ গানটির ব্যবহারও একদম সিচুয়েশন অনুযায়ী করেছিলেন রবীন্দ্র অনুরাগী ঋতুপর্ণ ঘোষ।

‘গহন কুসম মাঝে’ (আবহমান)

রবীন্দ্রনাথের ভানুসিংহের পদাবলীর ‘গহন কুসম মাঝে’ গানটি আবহমান ছবিতে ব্যবহার করেছিলেন ঋতুপর্ণ। ছবির মাঝে তৈরি হচ্ছে আরের ছবি-সেইখানে ডান্স নম্বর হিসেবে বাজছে এই গান।

‘বধূ কোন আলো লাগলো চোখে’ (চিত্রাঙ্গদা)

যীশু সেনগুপ্ত ও ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রেম, বিচ্ছেদ-বেদনা সবই ফুটে উঠেছিল চিত্রাঙ্গদার ‘’বধূ কোন আলো লাগলো চোখে’’র মধ্য দিয়ে। সেলুলয়েডের পর্দায় এই গানের এমন ব্যবহার সত্যিই দুর্লভ।

রবীন্দ্রনাথের নৃত্যনাট্যের এক নতুন বিশ্লেষণ ধরা পড়ে ঋতুপর্ণর হাতে। শুরুর শিকারের গানটির কথাই ধরা যাক। অনবদ্য রূপে উপস্থাপন করেন পরিচালক আমাদের চেনা গানটি।

‘অমল ধবল পালে লেগেছে’ (উৎসব)

বাঙালি রবীন্দ্রনাথের গান কোনও তামঝাম ছাড়া খালি গলাতেই গাইতে অভ্যস্ত। আর সেটাই তুলে ধরেছেন পরিচালক উৎসব ছবিতে। অর্পিতা পালের কণ্ঠে এই গানটি আজও আমাদের কানে বাজে।

শুধু কি গান? ঋতুপর্ণের প্রত্যেকটি ছবিতে রবীন্দ্রনাথের সুর আবহে ঘুরে ফিরে এসেছে। তা সে চোখের বালিতে ‘এ কি লাবণ্য পূর্ণ প্রাণ’ হোক কিংবা ‘নৌকাডুবি’ তে ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি’।

কথায় বলে মানব জীবনের এমন কোনও অনুভূতি নেই যা নিজের গানের মধ্যে দিয়ে স্পর্শ করেননি রবীন্দ্রনাথ। বাঙালীর চিরসখার প্রতি কতখানি অফুরন্ত শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা থাকলেই রূপোলি পর্দায় সেই গানের এত সুন্দর ব্যবহার করা যায় তা বলা মুশকিল। এই প্রশ্নের উত্তর বোধহয় শুধু ঋতুপর্ণ ঘোষের কাছেই ধরা ছিল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#rituparno ghosh, #Rituparno, #Ritu Da, #Rabindranath Tagore, #rabindra sangeet

আরো দেখুন