করোনার জেরে বদলে যাচ্ছে স্কুল
করোনা আবহে বদলাচ্ছে স্কুলের চেহারা। স্কুলে ঢোকার সময় থেকে শুরু করে ক্লাস করা বিভিন্ন ক্ষেত্রেই একাধিক বিধি তৈরি করছে স্কুলগুলি। মূলত করোনা আবহে স্কুল খুলে গেলে কিভাবে হবে ক্লাসরুমে লেখাপড়া, হাজিরা কত হবে,কতটা গুরুত্ব দেওয়া হবে ছাত্র-ছাত্রীদের স্যানিটাইজেশনকে তারই মহড়া চলল সোমবার সল্টলেকের বেসরকারি স্কুলে।
স্কুলে ঢোকার মুখেই বসানো হয়েছে স্যানিটাইজার টানেল, শুধু তাই নয় স্যানিটাইজার মেশিন দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে ক্লাস রুম । ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই স্কুলের বাইরে এই স্যানিটাইজার টানেল ৷ এখান দিয়েই ১০ সেকেন্ড স্যানিটাইজাড হওয়ার পর ঢুকবে ছাত্র-ছাত্রীরা । তারপর হবে থার্মাল গান দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা। সেই পরীক্ষাতে পাস করলে হাতে স্যানিটাইজার নিয়ে তবেই অনুমতি মিলবে ক্লাসরুমে ঢোকার।তবে শুধু স্যানিটাইজড হওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত নিরাপত্তা। কিভাবে ক্লাস রুমে বসানো হবে তার জন্যও তৈরি হয়েছে নির্দিষ্ট গাইডলাইন। প্রত্যেকদিন বেঞ্চে একজন করে বসলেও বসানো হবে কোনাকুনি।যাতে একজন ছাত্রের সঙ্গে অন্য ছাত্রের মধ্যে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স বা সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে। এ প্রসঙ্গে ওই বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হেমশ্রী দত্ত বলেন ” স্কুল চালু হলে আমরা এই পদ্ধতিতেই ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস করাব বলেই ঠিক করেছি।”
করোনা আবহে স্কুল খুললে অন্তত রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলের ছবিটা ঠিক এরকমই হতে চলেছে। তবে স্কুল খুললেও একসঙ্গে সব ছাত্রছাত্রী ক্লাস করতে পারবেনা তা জানাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষই। অনলাইন এবং অফলাইন দুটি মাধ্যমেই ক্লাস করানো হবে ছাত্র-ছাত্রীদের।৫০٪ পড়ুয়া প্রথম দিন স্কুলে আসবেন ও ক্লাস করবেন।তার পরের দিন আবার বাকি ৫০% পড়ুয়া এসে ক্লাস করবেন।
যেহেতু সামাজিক দূরত্ব বিধি মানতে হবে তার জন্যই এই পদ্ধতি মেনেই আগামী দিনে স্কুলগুলি ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস রুমে ক্লাস করাবে বলেই চিন্তাভাবনা শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। যাতে কোনোভাবেই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে স্কুলে ছাত্ররা বসতে না পারেন তার জন্যই প্রাথমিকভাবে প্রথম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস না করানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে স্কুল গুলি। আপাতত অষ্টম,নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের নিয়ে ক্লাস নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে স্কুল। তবে স্কুলের চেহারা বদলে যাওয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে থেকে। নবম শ্রেণীর ছাত্রী শ্রেয়া মন্ডল বলেন ” আমরা একসঙ্গে সবাই মিলে ক্লাস করতে পারব না এটাতে আমাদের আক্ষেপ হচ্ছে। কিন্তু এটাও ঠিক বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা দরকার।”
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এবং তার জেরে চলা লকডাউন এর জন্য দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে রাজ্যের স্কুলগুলি। আগামী ৩০শে জুন পর্যন্ত রাজ্যে স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে। যদিও জুলাই মাস থেকে কার্যত বিভিন্ন পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। সিবিএসই,আইসিএসই, উচ্চমাধ্যমিকের মত পরীক্ষাগুলি স্কুলেই নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রেও ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে কিভাবে ঢুকবেন কিভাবে বসবেন তারই এক প্রকার মহড়া সোমবার সল্টলেকে বেসরকারি স্কুলে হয়ে গেল। যাতে কার্যত পরিষ্কার লকডাউন পরবর্তী পর্যায়ে স্কুল খুললে বদলে যেতে চলেছে স্কুলের ছবি।