রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

পরিযায়ীদের কোয়ারান্টিন সেন্টার সাত হাজার স্কুলে

June 1, 2020 | 2 min read

ট্রেন, বাস এবং গাড়িতে প্রতিদিনই হাজারে হাজারে পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরছেন। এখনও ফেরার অপেক্ষায় কয়েক লক্ষ। বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিককে কোয়ারান্টিন কেন্দ্রে রাখতে এ বার রাজ্যে সাত হাজারের বেশি স্কুল ও কলেজ অধিগ্রহণ করছে রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানান।

এই বিপুল সংখ্যক স্কুল ও কলেজে কোয়ারান্টিন কেন্দ্র হলে স্বাভাবিক ভাবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩০ জুনের পর আদৌ খোলা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় শিক্ষামহলে। এর মধ্যেই বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আবার স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা করতে চাইছিল। ফলে তা নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকের তিন দিনের বকেয়া পরীক্ষা ২৯ জুন, ২ ও ৬ জুলাই হওয়ার কথা। যে সব স্কুল বা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের সিট পড়বে, সেগুলি কোয়ারান্টিনের জন্য নেওয়া হচ্ছে না বলে এদিন জানান পার্থ। সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেন্দ্র ৩০ জুন পর্যন্ত লকডাউন জারি রেখেছে। ২৯ জুন কি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে? পার্থ বলেন, ‘আমি তো জানি, এ রাজ্যে ১৫ জুন পর্যন্ত লকডাউন। তা ছাড়া পরীক্ষার চেয়ে আমরা ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের জীবনরক্ষায় অগ্রাধিকার দিচ্ছি। তাই সুরক্ষার ব্যাপারে কোনও আপস করা হবে না।’ সেই সঙ্গে তিনি এদিন আবার বাড়ির কাছাকাছি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রের পক্ষে সওয়াল করেন।

পরিযায়ীদের কোয়ারান্টিন সেন্টার সাত হাজার স্কুলে

নবান্ন সূত্রে খবর, দফায় দফায় মোট ২৩৫টি ট্রেন বোঝাই পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে ফিরবেন। শনিবার সন্ধে পর্যন্ত ৩৩-৩৪টি ট্রেন বিভিন্ন রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছেছে। শনিবার রাত থেকে রবিবার রাত পর্যন্ত আরও অন্তত ২৫টি ট্রেন ঢোকার কথা। শুক্রবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছিলেন, ৭৫ হাজার শ্রমিক ইতিমধ্যে রাজ্যে এসেছেন। বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাস ও গাড়ি করে মানুষ আসছেন। ফলে দু’দিনে সংখ্যাটা লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে অনুমান। এর মধ্যে আবার গুজরাট, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, রাজস্থান ও তামিলনাড়ুর মতো হটস্পট রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি কোয়ারান্টিনে যেতে হবে বলে নবান্ন ঠিক করেছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের অপরিকল্পনার জন্যই পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া গেলে এই সমস্যায় কাউকেই পড়তে হত না।’

রাজ্যের একাধিক জেলায় বহু স্কুল ও কলেজ ইতিমধ্যে কোয়ারান্টিন সেন্টারের চিঠি হাতে পেয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের একটি সংগঠনের সম্পাদক চন্দন মাইতির স্কুলেও কোয়ারান্টিন সেন্টার হয়েছে। চন্দন বলেন, ‘আলোচনা ছাড়াই স্কুলগুলি নিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’ কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ১১টি কলেজ নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সাতটি কলেজ নেওয়া হয়েছে কোয়ারান্টিন সেন্টারের জন্য। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি ভবন আগে থেকেই কোয়ারান্টিন সেন্টার ছিল। নতুন করে আইন ভবনও নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের উপাচার্য পরিষদের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, অনেক কলেজে উম্পুন দুর্গতদের জন্য ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। কোয়ারান্টিন সেন্টারও হয়েছে বেশ কয়েকটি কলেজে। সেজন্য ৩০ জুন অবধি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখা হোক। রাজ্য সেই সুপারিশ মেনেও নিয়েছে। ওয়েবকুটার সভাপতি শুভোদয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘এমনিতে কবে পরীক্ষা ও কী ভাবে ক্লাস হবে, তা নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা বিভ্রান্ত। তার মধ্যে কলেজ ক্যাম্পাসগুলি কোয়ারান্টিন হলে আবার কবে ক্লাস নেওয়া যাবে, সে ব্যাপারে অনিশ্চয়তা তৈরি হল।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#CoronaPandemic, #School, #Migrant Labourers

আরো দেখুন