কলকাতা পুরসভার পাশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
করোনার মোকাবিলায় ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে এ বার লড়াইয়ে নামছে কলকাতা পুরসভা। গোটা রাজ্যে করোনার প্রকোপের নিরিখে কলকাতার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। তাই, আন্তর্জাতিক মানের বিশেষজ্ঞ-পরিষেবা হাতিয়ার করেই এগোতে চায় রাজ্য সরকার। এ ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভাকে করোনা-মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও তার রূপায়ণে যাবতীয় সহায়তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দেবে।
গত সোমবার, ২৫ মে স্বাস্থ্য ভবনে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম পুরকর্তাদের নিয়ে এক জরুরি বৈঠক করেন। তাতে কলকাতা পুরসভার নোডাল অফিসার এসকে থাড়ে উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে মহানগরীর করোনা-পরিস্থিতির চুলচেরা বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশ জুড়েই জনজীবনের নানা ক্ষেত্রে এখন লকডাউনের আগড় শিথিল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু এই অবস্থায় কলকাতায় করোনার প্রকোপ যাতে নতুন করে আশঙ্কার কারণ হয়ে না-দাঁড়ায়, তা নিশ্চিত করতে চায় স্বাস্থ্য ভবন। সেই জন্যই তাদের মত হল, কলকাতা পুরসভা করোনা মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তা নিক।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যে সব এলাকায় সারি ও জ্বর-সর্দি-কাশি শনাক্তকরণে হাউস সার্ভে বা বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার ব্যাপ্তি ৫০ শতাংশর কম, সেই সব তল্লাটে আরও নিবিড় সমীক্ষার কাজ বাড়াতে হবে। সমীক্ষা চলার সময়ে যাতে বয়স্ক ও কোমর্বিডিটির মানুষরা বাড়িতে থাকেন, তার চেষ্টা চালাতে হবে। কনটেনমেন্ট এলাকায় প্রতিটি সারি ও জ্বর-সর্দি-কাশির পরীক্ষা বা টেস্ট করার সব রকম পদক্ষেপ করতে হবে। করোনা মোকাবিলার স্বার্থে নিবিড় ও সার্বিক প্রতিরোধমূলক কর্মকাণ্ড চালানোর লক্ষ্যে কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা কমাতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ২৫ তারিখের ওই বৈঠকে।
ঠিক হয়েছে, পুরসভার ল্যাব টেকনিশিয়ানদের দু’দফায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা স্বাস্থ্য দপ্তর করবে। স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তা বলেন, ‘স্বাস্থ্য দপ্তর ও কলকাতা পুরসভার লক্ষ্য একটাই— করোনার মোকাবিলা। কিন্তু তা সফল করতে সমন্বয়ের পাশাপাশি দরকার শ্রম বিভাজন। তাই কনট্যাক্ট ট্রেসিং, কোয়ারান্টিন ও আইসোলেশনের পরিকল্পনার দায়িত্ব থাকছে পুরসভার উপর। অন্য দিকে, রোগী শনাক্ত করা ও তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানোর দায়িত্ব স্বাস্থ্য দপ্তরের।’
নবান্নর তরফে আগেই বলা হয়েছিল, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে ডেঙ্গি প্রতিরোধেও নজরদারি ও পদক্ষেপের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সেই মতো, সাত দিন আগে স্বাস্থ্য ভবনের ওই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ডেঙ্গি ঠেকাতে কলকাতায় বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা শুরু হবে ১ জুন। সেই জন্য আলাদা সমীক্ষক দল কাজে নামবে।