একশো শতাংশ শ্রমিক নিয়ে কাজ শুরু চা-বাগানে
পুরো ১০০ শতাংশ চা শ্রমিক নিয়ে উত্তরবঙ্গের ২৮০টির বেশি খোলা চা-বাগানের সব ক’টিতে কাজ শুরু হল সোমবার। কমবেশি সাড়ে ৪ লক্ষ চা শ্রমিক কাজে যোগ দিলেন। শুধু স্থায়ী শ্রমিক নয়, অস্থায়ী শ্রমিকরাও কাজ ফিরে পেলেন এ দিন।
লকডাউনের শুরুতে ২২ মার্চের পর থেকে টানা প্রায় ২০ দিন বন্ধ ছিল চা-বাগানগুলি। এর পর ধাপে ধাপে ৫, ১৫, ২৫, ৫০ শতাংশ থেকে শেষ অবধি চা-বাগানগুলির জন্য ১০০ শতাংশ চা-কর্মীদের কাজে নিয়োগের আবেদনে শিলমোহর দেয় রাজ্য সরকার। তিন দিন আগের সেই সিদ্ধান্ত খুশির হাওয়া ছড়িয়েছিল চা-বলয়ে। খুশির ঝলক এ দিন দেখা গেল বাগানে বাগানে। চা বাগান মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে সোমবার জলপাইগুড়িতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করে স্বাস্থ্য দপ্তর।
টি অ্যাসোশিয়েসন অফ ইন্ডিয়ার ডুয়ার্স শাখার সচিব রাম অবতার শর্মা বলেন, ‘এটা খুবই প্রয়োজন ছিল। চা-শ্রমিকেরা সবাই উপকৃত হবেন। প্রতিটি চা-বাগান তার সর্বোচ্চ পর্যায়ে উৎপাদন করতে পারবে।’
চা-বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদুর ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অসীম মজুমদার বলেন, ‘প্রতিটি চা-বাগানেই এখন গাছে পাতা ভর্তি হয়ে রয়েছে। এখন সেকেন্ড ফ্লাশের ভরা মরসুম চলছে। প্রতিটি চা-বাগানই চাইবে তাদের সেরা চা প্রস্তুত করতে। সেই কাজ স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে।’ আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের মেন্টর মোহন শর্মা বলেন, ‘বিরাট বড় একটা সমস্যা ছিল। আজ আর নেই। চায়ের অর্থনীতি স্বাভাবিক হল।’ লকডাউন সময়কালে অনেক কষ্ট করে হলেও চা-শ্রমিকরা নিজেদের বাগানের জন্য কাজ করেছেন। আলিপুরদুয়ার জেলায় কোনও চা-বাগান বন্ধ বা অচল হওয়ার খবর আসেনি। গোটা চা-বলয়ে দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল।
চা বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, জুন মাস জুড়েই সেকেন্ড ফ্লাশের পাতা তোলার কাজ চলবে। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। রাজ্য সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে যেহেতু করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, স্বাভাবিক ভাবেই শুধু উৎপাদন নয়, চা-শ্রমিকদের করোনা থেকে মুক্ত রাখতেও সচেতন থাকতে হবে চা-বাগান মালিককে। কোনও বাগানে একবার ভাইরাস ছড়ালে বিপদে পড়তে পারে গোটা বাগানটি। সেক্ষেত্রে প্রতিটি চা-বাগানের উচিত প্রতিদিন পালা করে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। কঠোর ভাবে স্বাস্থ্যবিধি রাখা বাগানের ভেতর। সোমবার যে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরেছে, তা ধরে রাখা যাবে।