তিন দিনে কন্টেইনমেন্ট জোন ১০৭৬ থেকে বেড়ে ১৫৭১টি
পরিযায়ী শ্রমিক আসার পরে গত তিন চারদিনে রাজ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বাড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যাও। মঙ্গলবার দেখা গিয়েছে, রাজ্যে এফেক্টেড জোনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪৪। যা আগে ছিল ৭১৮। একইভাবে বেড়েছে বাফার জোনের সংখ্যাও। দিন তিনেক আগে তা ছিল ৩৫৮, এদিন তা বেড়ে হয়েছে ৭২৭। সবমিলিয়ে কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৭১। যা আগে ছিল ১০৭৬।
তিন চারটি জেলা বাদে প্রায় সব জেলাতেই দ্রুত কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। যে কোচবিহার জেলায় একটিও কন্টেইনমেন্ট জোন ছিল না, সেখানেও এদিনের হিসেবে দেখা যাচ্ছে ২৯টি এফেক্টেড জোন রয়েছে। বাকি জেলাগুলি থেকে যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে, তাতে কলকাতায় ৩৫১, হাওড়ায় ৭৬, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩৪, উত্তর ২৪ পরগনায় ১৪৪, হুগলিতে ২৯, নদিয়ায় ৫৪, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৪, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৩, পূর্ব বর্ধমানে ১৯, পশ্চিম বর্ধমানে এক, মালদায় ২০, জলপাইগুড়িতে ২, কালিম্পঙে ২, দার্জিলিঙে ২, দক্ষিণ দিনাজপুরে ২, উত্তর দিনাজপুরে ২১, মুর্শিদাবাদে ৮, বাঁকুড়ায় ৮, বীরভূমে ৪০ দাঁড়িয়েছে। সবমিলিয়ে মোট ৮৪৪টি কনটেইনমেন্ট এফেক্টেড জোন রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তিনদিন আগেও যা ছিল ৭১৮। গত কয়েকদিনে মারাত্মকভাবে সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে, বীরভূম, নদীয়া, উত্তর দিনাজপুর ও মালদাতে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, যেখানেই মহারাষ্ট্র থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা আসছেন, সেখানেই করোনা রোগীর সন্ধান মিলছে। ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্র থেকে চল্লিশটি ট্রেন এসেছে রাজ্যে।
এফেক্টেড জোনের সঙ্গেই বেড়ে গিয়েছে বাফার জোনের সংখ্যাও। সরকারি হিসেবে এদিন দেখা গিয়েছে, বাফার জোনের সংখ্যা কলকাতায় ৩৫১, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩৪, উত্তর ২৪ পরগনায় ১৪৪, হুগলিতে ২৯, নদিয়ায় ৫৪, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৪, মালদায় ২০, জলপাইগুড়িতে এক, দার্জিলিঙে ২, দক্ষিণ দিনাজপুরে ২, উত্তর দিনাজপুরে ২১, মুর্শিদাবাদে ৮, বাঁকুড়ায় তিন, বীরভূমে ৪০, কোচবিহারে ২৯। ফলে বাফার জোনের সংখ্যাও বেড়ে হয়েছে ৭২৭।
আগামী ১০ জুন পর্যন্ত রাজ্যে আরও শ্রমিক স্পেশাল আসবে। আসবে প্রচুর প্যাসেঞ্জার স্পেশালও। ফলে করোনা রোগীর সংখ্যা আগামী এক সপ্তাহে দ্রুত বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছে নবান্নের শীর্ষ কর্তারা। আর সেই কারণেই যেখানে নতুন করে করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া যাবে, সেই এলাকাকে তৎক্ষণাৎ কন্টেইনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় করোনা রোগীর জন্য হাসপাতাল বাড়াতেও উদ্যোগী হয়েছে নবান্ন। তবে এতকিছুর পরও কয়েকটি জেলা নিয়ে কিন্তু উদ্বেগ কিছুতেই কমছে না রাজ্য সরকারের। সেই সব জেলা প্রশাসনের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলছেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। পাঁচটি হটস্পট রাজ্য থেকে যাঁরা আসছেন তাঁদের ঠিকমতো পরীক্ষা করা হচ্ছে কি না এবং কোভিড পজিটিভ বেরলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা কতটা হচ্ছে, তার খোঁজখবরও নিচ্ছে নবান্নের শীর্ষ কর্তারা।