সেল বন্ধ, মাস্ক-দূরত্বের হরেক বিধি শপিং মলে
দু’দিনের মধ্যে সব ব্যবস্থা পাকা করে ফেলতে হবে। তাই এখন দম ফেলার ফুরসৎ নেই শহরের কোনও শপিং মল ম্যানেজারের। কতগুলো থার্মাল স্ক্যানার আনতে হবে, কোথায় কোথায় বসবে স্যানিটাইজার মেশিন, মলে ভিড় থাকলে খদ্দেররা দাঁড়াবেন কোথায়—চলছে তারই নীল নকশা তৈরি। এর মাঝেই এসে চলেছে বিভিন্ন রিটেল আউটলেট থেকে ফোন। শুরুর দিকে অন্তত ক’জন কর্মীর আসার অনুমতি থাকবে? তাঁদের জন্য বিশেষ কী ব্যবস্থা—সব মিলিয়ে শশব্যস্ত মল ম্যানেজারেরা।
ফিউমিগেশন চেম্বার ব্যবহার কতটা নিরাপদ, মঙ্গলবার পর্যন্ত তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি এলগিন রোড ফোরামের ম্যানেজার উজ্জ্বল। তার বদলে দূরত্ব-বিধি বহালে কড়া নজর দেওয়ার নির্দেশই দিয়েছেন কর্মীদের। উজ্জ্বলের কথায়, ‘সিনেমা হল বন্ধ থাকবে, এটা একটা সুবিধা। কিন্তু চিরস্থায়ী সমাধান নয়। আমরা ভাবছি কোনও দু’জন যাতে পরস্পরের কাছে না আসেন। লিফটের চার কোণে দাগ কাটা হয়েছে। এসকালেটরে দু’ধাপ অন্তর জুতো এঁকে দিচ্ছি। মানুষ ওখানেই দাঁড়াবেন।’ ৮৫টি রিটেল আউটলেট এবং মলের কর্মী ও রিটেল-কর্মী মিলিয়ে প্রায় দু’হাজার জনের কর্মস্থল ফোরামে দিনে গড়ে ১৫ হাজার মানুষ আসেন। ৮ জুন মল খোলার পর পুরোনো দিনে ফিরতে কিছুটা সময় লাগবে বলেই মনে করছেন কর্মীরা। কিন্তু শুরু থেকেই সাবধান তাঁরা।
১২৫টি রিটেল আউটলেট এবং আড়াই হাজারের কাছাকাছি কর্মী কোয়েস্ট মলে। এখানকার কর্ণধার সঞ্জীব মেহরা বনেন, ‘শপিং সেন্টার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া একটা গাইডলাইন তৈরি করেছে। ওই গাইডলাইন মেনেই মল খুলব। ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সব ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু যাঁরা আসবেন, তাঁদেরও দায়িত্ব থাকবে। আগে দাঁড়াতে হত না। এখন হয়তো হবে। তাতে বিরক্ত হলে চলবে না।’
শপিং সেন্টার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার অমিতাভ তানেজা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং হু-র যা যা নির্দেশিকা, সে-সব মেনেই গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রকে দিয়ে অনুমোদনও করিয়েছি। শপিং মল চালু রেখে সর্বোচ্চ যা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব, তার সবই হচ্ছে।’
পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় শপিং মল সাউথ সিটি-র পক্ষে দীপ বিশ্বাস বলেন, ‘৫ জুনের মধ্যে আমাদের পুরো ব্যবস্থা শেষ হবে। আমাদের এখানে প্রায় ১৬৭টি রিটেল আউটলেট। কর্মীর সংখ্যা তিন হাজারের কাছাকাছি। মলের কাজের পাশাপাশি রিটেল আউটলেটগুলোর জন্যও কিছু নির্দেশিকা রয়েছে। সে সবই কার্যকরী করা হবে।’
রিটেল আউটলেটগুলোর জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে রিটেলার্স অ্যাসেসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া। মুম্বইয়ে সংস্থার সদর দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, একটা ‘কমন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর’ তৈরি করা হয়েছে। কী আছে সেই ব্যবস্থাপত্রে? দেখা গিয়েছে আউটলেটে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় কাউন্টার এবং গৃহস্থালির জিনিস রাখার জায়গায়। এই সব জায়গায় ভিড় কমাতে কিছু উপায় বাতলানো হয়েছে। কাউন্টারের সংখ্যা বাড়ানো, অনলাইন পেমেন্টে জোর, নির্দিষ্ট শেলফের সামনে ক্রমাগত নজরদারি, দেরি হলে খদ্দেরদের সাহায্য করার কথা বলা হয়েছে। আপাতত প্রচুর ছাড়ের কোনও সেল না দেওয়ারও উপদেশ রয়েছে। প্রবীণদের জন্য সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন বা সময় বেঁধে দেওয়া যায় কি না, সে দিকটাও দেখার অনুরোধ করা হয়েছে গাইডলাইনে।