মুম্বইকে রেহাই দিল নিসর্গ, পুনে-রায়গড়ে মৃত তিন
মৌসম ভবনের নথি ধরলে ১২৯ বছরে কোনও ঘূর্ণিঝড় সরাসরি আছড়ে পড়েনি মুম্বইয়ে। বুধবার বাণিজ্যনগরীকে রেহাই দিল তীব্র ঘূর্ণিঝড় নিসর্গও। আবহবিদরা মঙ্গলবারই বলেছিলেন, আলিবাগের কাছে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়। আদতে এ দিন দুপুর একটা নাগাদ নিসর্গ আছড়ে পড়ল আলিবাগেরও দক্ষিণে। মুম্বই থেকে প্রায় ৭০-৮০ কিলোমিটার দূরে। তাই ঝড়ের সরাসরি দাপট থেকে রক্ষা পেল দেশের অর্থনৈতিক রাজধানী। রায়গড় ও পুনে জেলায় বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে, পাঁচিল ভেঙে, উড়ে যাওয়া টিনের আঘাতে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। মুম্বইয়ে প্রাণহানির কোনও খবর নেই। দুশোর কাছাকাছি গাছ ভেঙে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পালঘর, রত্নগিরি, সিন্ধুদুর্গ জেলাও।
নিসর্গ মহারাষ্ট্রে আসা ষষ্ঠ ঘূর্ণিঝড়। এর আগে ১৯৪৮ ও ২০০৯ সালে মুম্বইয়ের খুব কাছ দিয়ে সরে যায় ঘূর্ণিঝড়। এ দিনও তাই। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দুপুরে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সময় রায়গড় জেলায় উপকূলে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বয়ে যায়। আলিবাগে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ওঠে ঘণ্টায় ১০২ কিলোমিটারে। মুম্বইয়ে ঝড়ের গতিবেগ ছিল ৫০ কিলোমিটার/ঘণ্টার আশপাশে। রাতের খবর, তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে স্থলভাগে ঢোকা নিসর্গ পুনের উত্তরে অবস্থান করছে অতি গভীর নিম্নচাপ রূপে। আরও শক্তি হারিয়ে মধ্যপ্রদেশের দিকে চলে যাবে সে। নেপাল লাগোয়া উত্তরপ্রদেশেও পৌঁছে যেতে পারে দুর্বল নিম্নচাপ। এর ফলে নেপালে প্রবল বৃষ্টি হয়ে উত্তরপ্রদেশে বানভাসি পরিস্থিতি তৈরি হয় কি না, সে দিকে নজর রাখছেন আবহবিদরা।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, স্থলভাগে ঢোকার পর ঘূর্ণিঝড় লোনাভালার খুব কাছ দিয়ে পুনে জেলার দিকে সরে যায়। তবে পুনে শহর থেকেও বেশ খানিকটা দূরে ছিল ঝড়ের কেন্দ্র। মুম্বইয়ে সকাল থেকে বৃষ্টি হয়। বাতাসের জোর কখনওই বেশি না ওঠায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন মুম্বইকররা। মঙ্গলবারই বান্দ্রা-কুরলা কমপ্লেক্সের কোভিড হাসপাতাল থেকে ২৫০ জন করোনা রোগীকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতালটি। দুপুরে ফেডএক্সের একটি কার্গো বিমানকে ধাক্কা মেরে অনেকটা সরিয়ে দেয় ঝড়। এর পরই দুপুর থেকে সন্ধে ছ’টা পর্যন্ত বিমানবন্দর বন্ধ ছিল। দুপুরের ট্রেনগুলির যাত্রার সময়ও পিছিয়ে দেওয়া হয়।