চার বছরে সবচেয়ে স্বস্তির গরম দেখল কলকাতা
এ বছরের মার্চ-এপ্রিল-মে ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে আরামে কাটল কলকাতাবাসীর। চার বছর চল্লিশ না ছুঁয়েই মে মাস পার করল কলকাতা। একটানা এতটা আরামের স্বাদ গত দেড় দশকে কখনও পায়নি মহানগর।
ফেব্রুয়ারির আউটলুকেই আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছিল, এ বছর তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকবে। কিন্তু আসলে তার চেয়ে বেশি ছাড় মিলল। রাজ্যের পশ্চিম ভাগের তাপপ্রবাহের তেমন দাপট দেখা যায়নি। তিন মাস মিলিয়ে কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার গড় দাঁড়িয়েছে ৩৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা স্বাভাবিকের (৩৪.৭ ডিগ্রি) চেয়েও কম। ১৫ বছরের মধ্যে মাস জুড়ে (গড় ৩৪.২ ডিগ্রি) পারদের এতটা কম উত্থান এই প্রথম।
তথ্য বলছে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নিরিখে ইদানীংকালে সবচেয়ে কম গরম পড়েছিল গত বছর। কিন্তু আর্দ্রতার কারনে তা বোঝা যায়নি। এ বার আর্দ্রতার পরিমানও অনেক কম। তাপমাত্রা দেখলে এক-দু’দিন গত বছরের চেয়ে বেশি পারদ চড়েছে এ বছর। কিন্তু নিয়মিত ঝড়-বৃষ্টি গরমকে দমিয়ে রেখেছে। যেমন, আম্পান আসার তিন দিন আগে তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৩৮.৩ ডিগ্রিতে (এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ)। আম্পানের বৃষ্টির পর তা নেমে যায় ২৬.৮ ডিগ্রিতে।
মার্চে পশ্চিমি ঝঞ্ঝার আনাগোনা অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি ছিল। অনেক সময়ই উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল পশ্চিমি অক্ষরেখা। সে কারনেই বিকেল-সন্ধ্যা ছাড়াও, দিনেও কালবৈশাখীর দেখা মিলছে বঙ্গে। সব মিলিয়ে জলীয় বাষ্পের জোগানে ত্রুটি রাখেনি বঙ্গোপসাগরে বিপরীত ঘূর্ণাবর্তও। সেই জলীয় বাষ্প নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত তুলে দেওয়ার জন্য ঝাড়খণ্ড বা পূর্ব উত্তরপ্রদেশে কোনও না কোনও ঘূর্ণাবর্ত ছিল দীর্ঘ সময়।
মে মাসে আম্পান আর শক্তিশালী দখিনা-পুবালি হাওয়ার কারনে বাংলায় ঢুকতে পারেনি উত্তর ভারতের গরম হাওয়া বা লু। সর্বকালীন রেকর্ড গড়েছে মে-র বৃষ্টিও। পরিমাণ ৩৮৩ মিলিমিটার। গত ১২০ বছরে এর কাছাকাছি বৃষ্টি হয়েছিল ১৯৩৮ সালে, ৩৬৯.৩ মিলিমিটার।
তবে মে তেই গরমের দাপট শেষ নয়। গত দু’বছর দেখা গিয়েছে, জুনেও চড়তে পারে তাপমাত্রার পারদ। ২০১৮ সালে বর্ষা আসার পরও বিরল তাপপ্রবাহ দেখা যায় কলকাতায়। তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ৪০.৬ ডিগ্রিতে। গত বছরও প্রায় এক প্রবণতা ছিল। কারণ, বর্ষার দেরি অথবা শুরুতে নিস্তেজ বর্ষা।