ফি নিয়ে চড়ছে অসন্তোষের পারদ
বেসরকারি স্কুলের ফি নিয়ে অভিভাবকদের অসন্তোষ অব্যাহত। বুধবার দমদমের একটি স্কুলের পর বৃহস্পতিবার উত্তর কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজিয়েট স্কুলেও অভিভাবকদের একাংশ প্রতিবাদে সামিল হন। অন্যান্য স্কুলের মতো এখানেও শুধুমাত্র টিউশন ফি দেওয়ার দাবি তুলে অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কথা বলতে চেয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। অভিভাবকদের দাবি, ডেভেলপমেন্ট ও কম্পিউটার-সহ অন্যান্য ফি এখন দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই তাঁরা।
এই দাবিতে এর আগে জিডি বিড়লা, সেন্ট স্টিফেন্সেও বিক্ষোভ হয়। ইন্দাস ভ্যালি স্কুলের অভিভাবকরা দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্য সরকারের। শনিবার ফের বিক্ষোভের ডাক দেওয়া আছে জিডি বিড়লারই সামনে। আগামী ১১ জুন ধর্মতলায় সমাবেশ ও বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে অভিভাবকদের যৌথ মঞ্চ ইউনাইটেড গার্ডিয়ান ফোরামের তরফে। সংগঠনের তরফে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘অভিভাবকরা বার বার স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছেন। কিন্তু স্কুলগুলি তার কোনও জবাব দিচ্ছে না। আমরা চাইছি, সমস্ত অপ্রয়োজনীয় ফি আপাতত নেওয়া বন্ধ হোক। সরকারের তরফেও যথার্থ পদক্ষেপ আমরা করতে না পেরে বাধ্য হয়েই আন্দোলনের পথে যেতে হচ্ছে।’
স্কটিশ চার্চ স্কুলে সব মিলিয়ে ১৮০০-১৯০০ টাকা ফি দিতে হয়। এর মধ্যে ৭০০-৮০০ টাকা শুধু টিউশন ফি। সেই ফিটুকুই অভিভাবকরা চাইছেন দিতে। কিন্তু এ দিন তাঁদের সঙ্গে কথা বলার মতো কর্তৃপক্ষের কেউ স্কুলে ছিলেন না। পরে অবশ্য স্কুলের অধ্যক্ষ বিভাস সান্যাল বলেন, ‘দাবি সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। কিন্তু স্কুল না-খুললে কী ভাবে আলোচনা করা সম্ভব! ম্যানেজিং কমিটির বৈঠকও করা যাচ্ছে না। আমরা অভিভাবকদের প্রতি সহানুভূতিশীল।’ অধ্যক্ষ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এ বছর কোনও ফি বাড়ানো হয়নি। লেট ফাইনও মকুব করে দেওয়া হয়েছে। এর পর আরও ফি কমলে স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারীদের মাইনে দিতে অসুবিধে হবে। যদিও স্কুলটি সরকারের কাছ থেকে ডিএ পায়। বিভাসের বক্তব্য, ‘সরকার যে সব খাতে ডিএ দেয়, তার চেয়ে আরও কর্মী আছেন।’
এই ইস্যুতে ছাত্র সংগঠনগুলি অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বুধবার এই ইস্যুতে গেরুয়া ছাত্র শিবির এবিভিপি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করেন। সংগঠনের দক্ষিণবঙ্গের সম্পাদক সুরঞ্জন সরকার দাবি করেছেন, এক বছর সমস্ত ফি থেকে পড়ুয়াদের মুক্তি দিতে হবে। এ দিন একই দাবিতে আবারও সরব হয়েছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, ‘নির্দিষ্ট ভাবে সরকারি নোটিফিকেশন চাই। সরকার কোনও ভাবেই দায় এড়াতে পারে না।’