প্রতিবাদে ট্রুডোও, নাম বদল রাস্তার
ব্ল্যাক লাইভ্স ম্যাটার— এত দিন ছিল বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের স্লোগান। এ বার জুড়ে গেল রাস্তার নামের সঙ্গে। শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ-খুনের জেরে দেশ জুড়ে তৈরি হওয়া বিক্ষোভকে সম্মান জানিয়েই ওয়াশিংটনের ডেমোক্র্যাট মেয়র মুরিয়েল বাউসার হোয়াইট হাউসের সামনে একটি রাস্তার নাম রাখলেন— ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার প্লাজ়া’। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করেই বড়-বড় হরফে হলুদে লেখা হল ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার!
২৫ মে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার পরের দিন থেকেই বিক্ষোভ-ধুন্ধুমার শুরু হয় আমেরিকার প্রায় প্রতিটি শহরে। বাদ পড়েনি হোয়াইট হাউসের সামনের এই রাস্তাটিও। কিন্তু ট্রাম্প যে ভাবে তাঁর পুলিশ দিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে রাস্তা খালি করিয়েছিলেন, তা নিয়ে গোড়া থেকেই সরব ছিলেন শহরের মেয়র। কাল রাস্তার নাম পাল্টে তিনি সেই প্রতিবাদই জিইয়ে রাখলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আমেরিকার বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে চলতে থাকা প্রতিবাদের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। পার্লামেন্টের সামনে ‘নো জাস্টিস, নো পিস’ সমাবেশে হাঁটু মুড়ে বসে ফ্লয়েড-স্মরণ ও পুলিশি তাণ্ডবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেও দেখা যায় তাঁকে।
ফ্লয়েডকে নির্যাতনের ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল, তাঁকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় রাস্তায় ফেলে ঘাড়ের উপর হাঁটুর চাপ দিয়ে মিনিট পাঁচেক বসেছিল পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিন। অপরাধী দমনে পুলিশের এই ঘাতক ‘টেকনিক’ বাতিলের দাবিতে গত কালই ভোট হয়েছে মিনিয়াপোলিস সিটি কাউন্সিলে। নিজের প্রদেশে পুলিশের প্রশিক্ষণ থেকেই এই ধরনের প্যাঁচ-পয়জার তুলে দেবেন বলে সরব হয়েছেন ক্যালিফর্নিয়ার গভর্নরও।
এ দিকে ট্রাম্প স্বমেজাজেই। বিক্ষোভ ঠেকাতে হিংস্র কুকুর লেলিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। পরে হুমকি দেন সেনা নামানোরও। কাল হোয়াইট হাউস থেকে টিভিতে সম্প্রচারিত সাংবাদিক বৈঠকে আরও এক বার কার্যত কটাক্ষই করলেন প্রতিবাদীদের। তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘‘মানবাধিকারের জন্য এটা দারুন দিন। জর্জ ফ্লয়েডও নিশ্চিত উপর থেকে দেখে বলছেন, আমার দেশের জন্য সত্যিই ভাল কিছু হল! আজ ফ্লয়েডের জন্যও দারুণ একটা দিন।’’ তাঁর এই ‘দারুণ দিন’ মন্তব্যে জুড়ল বিতর্ক। অনেকেই বললেন, ফ্লয়েডের ঘটনা খাটো করে দেখানোটাই উদ্দেশ্য ছিল ট্রাম্পের। আর আগামী ভোটে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন টুইটারে লিখলেন, ‘‘ফ্লয়েডের শেষ কথা ছিল— দম আটকে আসছে আমার। যা এখন আমেরিকার পাশাপাশি প্রতিধ্বনিত হচ্ছে বিশ্বে। সেই ফ্লয়েডের মুখে যে ভাবে প্রেসিডেন্ট নিজের মতো করে কথা বসিয়ে দিচ্ছেন, তা ঘৃণ্য।’’