ভারতে করোনা সংক্রমণের ‘বিস্ফোরণ’ না হলেও বিপদ কমেনি, সতর্ক করল হু
ভারতে করোনা সংক্রমণের ‘বিস্ফোরণ’ এখনও হয়নি। তবে দেশজোড়া লকডাউন শিথিল হওয়ায় সেই ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। হুঁশিয়ারি দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। এই সতর্কতার মধ্যেই শনিবার স্পেন ছাপিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এল ভারত। হু’র বিশেষজ্ঞ মাইকেল রায়ান ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে প্রায় তিন সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। সংক্রামিত বেড়েই চলেছে। এই বিশ্বব্যাপী মহামারীর প্রভাব ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম। ভারত সহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে জনঘনত্ব খুব বেশি। তাই সংক্রমণের ‘বিস্ফোরণে’র আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। লকডাউনের মতো বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার সংক্রমণের গতি কম ছিল। কিন্তু তা শিথিল হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার বিপদ এখন ভারতের সামনে।
আক্রান্তের নিরিখে ভারতের আগে এখন মাত্র চারটি দেশ। শীর্ষে আমেরিকা। এরপর যথাক্রমে ব্রাজিল, রাশিয়া ও ব্রিটেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ ও মৃত্যুতে ফের রেকর্ড করেছে ভারত। নতুন করে আক্রান্ত ৯ হাজার ৮৮৭ জন। এর ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬৫৭। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে আরও ২৯৪ জনের। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬ হাজার ৬৪২। এই নিয়ে টানা তিনদিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজারের বেশি হল। আক্রান্ত ও মৃত্যুর নিরিখে দেশের মধ্যে এখনও শীর্ষে মহারাষ্ট্র। এই রাজ্যের জলগাঁও জেলায় এবার মৃত্যুর হার দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ, ১২.৩ শতাংশ। যেখানে জাতীয় গড় মৃত্যুর হার প্রায় ২.৮ শতাংশ। অর্থাৎ, গোটা দেশের নিরিখে জলগাঁওতে মৃত্যুর হার চারগুণেরও বেশি।
দেশের শহরগুলির মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যায় নিশ্চিতভাবেই সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মুম্বই ও দিল্লির। তবে এই দুই শহরের তুলনায় জনসংখ্যা অর্ধেকের কম হওয়া সত্ত্বেও পরিস্থিতি ভয়াবহ আমেদাবাদে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি ১০ লক্ষ জনসংখ্যায় মৃত্যুর সংখ্যায় দেশের মধ্যে শীর্ষে আমেদাবাদ। গুজরাতের এই শহরে প্রতি ১০ লক্ষ জনসংখ্যায় মৃত্যু হয়েছে ১১৫ জনের। মুম্বইয়ে এই সংখ্যাটা ৮০। বড় শহরগুলির মধ্যে এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো জায়গায় বেঙ্গালুরু। এখানে প্রতি ১০ লক্ষ জনসংখ্যায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন মাত্র একজন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, বর্তমানে দেশে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৯৪২। আর সুস্থ হয়ে উঠছেন ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৭৩ জন। সুস্থতার হার বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪৮.২০ শতাংশ।