ঘরের তাপমাত্রায় দিব্যি ভাল রাখা যায় ইনসুলিন
ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ইনসুলিন কী ভাবে সংরক্ষণ করা উচিত, তা নিয়ে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে অনেকেরই। অনেকেরই ধারণা, ইনসুলিন ফ্রিজের কৃত্রিম ঠান্ডা ছাড়া সংরক্ষণ করা যায় না। ঘরের তাপমাত্রায় রাখা হলে তার কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।
অথচ, ডাক্তারবাবুদের একটু জিজ্ঞাসা করে নিলেই এই অবাঞ্ছিত সঙ্কট তৈরি হত না। কারণ, ইনসুলিন ঘরের তাপমাত্রায় চার-ছয় সপ্তাহ অনায়াসে রাখা যায়। ইনসুলিনের কার্টরিজ বা ভায়ালের গায়ে ৪-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সংরক্ষণের যে নির্দেশিকা থাকে, তা মূলত স্টকিস্টদের জন্য। কারণ, ওষুধের গুদামে বেশ কয়েক মাস পর্যন্ত ইনসুলিন রাখা থাকে। তাই সেখানে নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রা প্রয়োজন। সুতরাং ওই সময়ে ফ্রিজের বাইরে থাকা ইনসুলিন এখনও ভাল আছে বলেই ধরা যায়।
ফ্রিজ না-থাকলে এবং গ্রীষ্মকালে ঘরের তাপমাত্রা খুব বেড়ে গেলে না-খোলা ইনসুলিন জল ভরা বাটি বা মাটির পাত্রে রাখা যায়। ভেজা ন্যাকড়ায় জড়িয়ে রাখাটাও একটা উপায়। জল ভরা পাত্রে ইনসুলিনের ভায়াল বা কার্টরিজ রাখার সময়ে মনে রাখা দরকার, জল আর ইনসুলিন যেন পরস্পরের সংস্পর্শে না আসে।
সরাসরি সূর্যের আলোতেও ইনসুলিন রাখা উচিত নয়। তবে যাঁরা একসঙ্গে অনেক মাসের ইনসুলিন কিনে রাখেন, তাঁদের কিন্তু ফ্রিজেই রাখতে হবে। আবার ফ্রিজ থেকে বার করেই যেন সেই ঠান্ডা ইনসুলিন শরীরে প্রবেশ করানো না-হয়। ইনসুলিন পেন কিন্তু ফ্রিজে রাখলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ইনসুলিন যেখানে রাখা হচ্ছে, সেখানকার তাপমাত্রা কোনও অবস্থাতেই ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে এবং ৪০ ডিগ্রির উপরে থাকাটা কাম্য নয়। ঘরের তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রির নীচে থাকলে সব চেয়ে ভাল। ডিপ ফ্রিজে ইনসুলিন রাখতে পইপই করে বারণ করে দিই আমরা। অত ঠান্ডায় ইনসুলিন কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে।
দোকানে গিয়ে ইনসুলিন কেনার সময়েও মাথায় রাখা দরকার তাপমাত্রার বিষয়টি। দোকানি ফ্রিজ থেকে ইনসুলিন বার করে দিলে যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব তা বাড়িতে নিয়ে আসা উচিত। যাতে বাইরের গরম ইনসুলিনের কার্যকারিতায় প্রভাব না ফেলে।
বেড়াতে যাওয়ার সময়ে ইনসুলিন সঙ্গে নিতে হলে কিছু ক্ষণ ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে সেটি থার্মোফ্লাস্কে নেওয়া উচিত। বিমানে ইনসুলিন কিন্তু কেবিন ব্যাগেজে নেওয়াই ভাল। আর, ইনসুলিন পেনের সঙ্গে সুচ লাগিয়ে রাখা ঠিক নয়।