মমতার নির্দেশে তিন জেলায় ক্যাপ্টেন গৌতম
করোনা মোকাবিলায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলার বিধায়ক ও নেতারা কে কীভাবে কাজ করবেন সে বিষয়ে যেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে কথা বলে নেন। শুক্রবার দলের বিধায়ক ও নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারে সুব্রত বকসি গোটা বিষয়টি দেখলেও জেলাস্তরে কাজকর্ম উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, দলের জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, জেলা কার্যনির্বাহী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, বিধায়ক মিহির গোস্বামী ও উদয়ন গুহকে মিলিতভাবে দেখার জন্য নেত্রী এদিন বলেছেন। ত্রাণ বিলি নিয়ে উত্তরবঙ্গ থেকে বেশ কিছু অভিযোগ নেত্রীর কানে যাওয়ায় এদিন তিনি দলের কয়েকজন নেতাকে কড়া ধমকও দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গে কোচবিহার ও শিলিগুড়িতে যেভাবে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন উদ্বেগ জানিয়েছেন।
বাংলার গর্ব মমতা কর্মসূচির অংশ হিসাবে জেলায় জেলায় তৃণমূল নেতৃত্ব সাংবাদিক সম্মেলন করছেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন কনফারেন্সে জানিয়েছেন, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে দলের কর্মসূচি রূপায়ণে গৌতম দেবের মতামত নিয়ে কাজ করতে হবে। করোনা মোকাবিলায় কোন বিধায়ক কতটা কাজ করেছেন, আইপ্যাক ও পুলিশের থেকে মুখ্যমন্ত্রী খুঁটিয়ে জেনে নিয়েছেন। সেই কথা তিনি বিধায়ক ও দলের নেতাদের জানিয়ে সতর্ক করে দেন। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বিজেপির মোকাবিলায় দলের বিধায়ক, নেতাদের সক্রিয় করার জন্য এদিন কার্যত গাইডলাইন দিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা সংকটের মোকাবিলা, আমপানে বিধ্বস্ত, দুর্গত মানুষকে ত্রাণ বিলি নিয়ে তিনি দলের নেতাদের আগেই সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রাজ্য বিজেপি নানা অভিযোগ তুলতে শুরু করায় এখন পালটা প্রচারে জোর দিচ্ছেন নেত্রী।
এদিন ভিডিও কনফারেন্সে ওই বিধায়ক ও নেতাদের তিনি অঞ্চল থেকে জেলাস্তরের সর্বত্র সজাগ নজর রাখতে বলেছেন। তাঁকে এই পরামর্শ দিয়েছেন ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোর। ইতিপূর্বেও নানা বিষয়ে বিধায়ক ও নেতাদের মানুষের সামনে আনার ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে পিকের পরামর্শে। কাটমানি ফেরতের ইশ্যুতে পিকের পরামর্শ কাজে লাগায় এখন সব ব্যাপারেই তাঁর কথা শুনে চলতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা এদিন বিজেপি নেতাদের নাম না করে বলেছেন, রাজনীতি করার সময় নয় এটা। সবার এখন দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। রাজ্য সরকার কীভাবে করোনা ও আমপানের মতো বিপদ মোকাবিলা করেছে এবং করছে তা নিয়ে জোরদার প্রচার চালাতে বিধায়ক ও নেতাদের নির্দেশ দেন তিনি। ভিডিও কনফারেন্সের শুরুতে প্রায় ৪০ মিনিট ভাষণ দেন মমতা। দলনেত্রী বিধায়কদের উদ্দেশে বলেন, এইসব নিয়ে শুধু আমিই বলে যাব নাকি? আপনারা বলবেন না? এগিয়ে আসবেন না? সংগঠনকে শক্তিশালী করতে বলার পাশাপাশি তিনি দলের সাংগঠনিক নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি কলকাতাকেন্দ্রিক করে রাখার বার্তা দিয়েছেন। জেলার নেতাদের তিনি জানিয়ে দেন, কোথাও ব্লক বা তার উপরের কোনও স্তরে সভাপতি বদল জেলা নেতৃত্ব করতে পারবেন না। প্রয়োজনে তাঁরা সুপারিশ করতে পারেন। চড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন রাজ্য নেতৃত্ব। এসসি, এসটি, ওবিসি সেলের রাজ্য কমিটির সংশোধন ও সংযোজন করা হবে বলে নেত্রী জানিয়েছেন।