বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

আজও আঁধারেই বিরসা মুন্ডার গ্রাম 

June 9, 2020 | 2 min read

উলগুলানের নায়ক বিরসা মুন্ডা । আজ ৯ জুন বিরসা মুন্ডার মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯০০ সালের এই দিনে ইংরেজ শাসকদের বন্দিদশা অবস্থায় মারা যান। মুন্ডা জনগণের কাছে বিরসা আজ কিংবদন্তি। বিরসাকে নিয়ে কত গান, কত গল্প। কিন্তু, স্বাধীনতার এত বছর পর কেমন আছে দেশের বীর যোদ্ধার গ্রাম? 

বিরসা মুন্ডা ছিলেন আদিবাসীদের পথ পদর্শক ও একজন সমাজ সংস্কারক। ব্রিটিশ শাসকদের অত্যাচার অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি আদিবাসী মুন্ডাদের সংগঠিত করে মুন্ডা বিদ্রোহের সূচনা করেছিলেন। বিদ্রোহীদের কাছে তিনি ‘বীরসা ভগবান’ নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ১৮৯৯-১৯০০ সালে ‘মুন্ডা বিদ্রোহ’ সংগঠিত হয়েছিল। এই বিদ্রোহের মূল লক্ষ্য ছিল মুন্ডারাজ ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা। এই বিদ্রোহকে মুন্ডারি ভাষায় ‘উলগুলান’ বলা হয়। যার অর্থ প্রবল বিক্ষোভ।

এই বিদ্রোহের পরে বীরসা সহ শতাধিক সঙ্গী গ্রেফতার হন। বিচারে বীরসা মুন্ডা সহ আরো দুজনের ফাঁসির হুকুম হয়। ১২ জনের দ্বীপান্তর ও ৭৩ জনের দীর্ঘ কারাবাস হয়। ফাঁসির ঠিক আগের দিন ১৯০০ সালের ৯ ই জুন রাঁচি জেলের অভ্যন্তরে খাবারে বিষ প্রয়োগে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৫ বছর।

বেকারত্বের হাহাকার স্পষ্ট বিরসা মুন্ডার জন্মের গ্রাম জুড়ে। গ্রামে কর্মসংস্থানের কোনো উপায় নেই। কাজের খোঁজে শহরে বা অনেক সময় রাজ‍্যের বাইরে যেতে হয় তাদের। অষ্টম শ্রেণির পর মেয়েদের পড়াশোনার কোনো ব‍্যবস্থা নেই গ্রামে। গ্রামের অধিকাংশ পরিবারই এখনো উজ্জ্বলা প্রকল্পের সুবিধা পায়নি। যারা পেয়েছেন টাকার অভাবে সিলিন্ডার ভর্তি করতে পারেনি। 

গ্রামের একমাত্র স্বাস্থ্যকেন্দ্র সপ্তাহে মাত্র কয়েকদিন খোলা থাকে, সেই দিনগুলোতেও চিকিৎসকরা নিয়মিত আসেননা। এলাকায় একটি মাত্র পানীয় জলের ট‍্যাঙ্ক বসানো হয়েছে, যা পর্যাপ্ত পরিমাণে জল সরবরাহ করতে পারে না। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে চরম জল সংকটে পড়তে হয় গ্রামবাসীদের।

বিরসা বলেছিলেন, ‘আমি বিরসা নই, আমি ধরতি আবা। এই পৃথিবী আমার সন্তান। আমি মুন্ডাদের নতুন ধর্ম শিখাব। আমি তোদের কোলে নিয়ে ভুলাব না। দুলাব না। আমি মুন্ডাদের মরতে আর মারতে শিখাব।’ তাঁরই জন্মস্থল আজও আঁধারেই রয়ে গেছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Birsa Munda death anniversary

আরো দেখুন