উত্তরবঙ্গে নতুন আরও তিনটি কোভিড হাসপাতাল
করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে আরও তিনটি কোভিড হাসপাতাল। যারমধ্যে দু’টি শিলিগুড়িতে এবং একটি জলপাইগুড়িতে হবে। একটিতে প্রথমসারির করোনা যোদ্ধাদের, একটিতে উপসর্গহীন রোগীদের চিকিৎসা করা হবে। আরএকটি হবে পেইড কোভিড হাসপাতাল। শিলিগুড়ি কোভিড হাসপাতালে রোগীর ভিড় উপচে পড়ায় স্বাস্থ্য দপ্তর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার এই পরিকল্পনার কথা জানান করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গে নিযুক্ত ওএসডি ডাঃ সুশান্তকুমার রায়। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা করোনার বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। এ জন্যই নতুন করে তিনটি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গে করোনার দাপট অব্যাহত রয়েছে। যতদিন যাচ্ছে, করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ততই বাড়ছে। এর মোকাবিলা করতেই করোনা যুদ্ধের পরিকাঠামো আরও চাঙ্গা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ওএসডি বলেন, শুধু চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনার বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধের প্রথমসারিতে রয়েছেন, তা নয়। এঁদের বাইরে পুলিসকর্মী, সাংবাদিক, সমাজসেবী সহ আরও কিছু মানুষ করোনা যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই তাঁদের চিকিৎসার জন্য জলপাইগুড়ি জেলার বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গণে ২০০ বেডের হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে উত্তরবঙ্গের যেকোনও প্রান্তের প্রথমসারির করোনা যোদ্ধাদের ভর্তি করে চিকিৎসা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, শিলিগুড়িতে আরও দু’টি কোভিড হাসপাতাল তৈরি করা হবে। যারমধ্যে একটি তৃতীয় লেবেলের হাসপাতাল হবে। যেখানে উপসর্গহীন রোগীদের চিকিৎসা করা হবে। এরবাইরে অনেকে নিজেদের অর্থে করোনার চিকিৎসা করাতে চান। তাঁদের জন্য হবে পেইড কোভিড হাসপাতাল। এ জন্য দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে দু’টি জায়গা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। এই দু’টি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার পর এখানে করোনার চিকিৎসা আরও সহজ হবে।
প্রসঙ্গত, শিলিগুড়িতে এতদিন পর্যন্ত একটি কোভিড এবং একটি সারি হাসপাতাল ছিল। ইতিমধ্যে সারি হাসপাতালকে কোভিডে রূপান্তরিত করা হয়েছে। দার্জিলিং পাহাড়ে একটি ১৫০ বেডের সারি হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির কোভিড হাসপাতালে বেড সংখ্যা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১১০টি। ইতিমধ্যে তা পূরণ হয়ে গিয়েছে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর ও মালদহ থেকে রোগী আসায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই চাপ কমাতেই সদ্য শিলিগুড়ির সারি হাসপাতালকে রূপান্তরিত করা হয়েছে কোভিড হাসপাতালে। এখানে বেড সংখ্যা প্রায় ৮০টি। আরও কিছু বেড বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য দপ্তরের একাংশের অভিযোগ, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলা সময়মতো কোভিড হাসপাতাল তৈরি করলে হয়তো শিলিগুড়ির কোভিড হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ত না। তাই শিলিগুড়িতে এখন নতুন করে সারি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ওএসডি বলেন, এসবের বাইরেও মহকুমা হাসপাতালগুলিতে আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২০টি করে বেড থাকবে। পাশাপাশি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতেও করোনার টেস্ট চালু করার চিন্তাভাবনা চলছে।