আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

ক্ষোভের জেরে পুলিশি পরিকাঠামো পাল্টাচ্ছে মিনিয়াপোলিসে

June 9, 2020 | 2 min read

শেষ আর্তিটুকু ছিল, ‘আই কান্ট ব্রিদ… নিঃশ্বাস নিতে পারছি না আমি।’ কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের এই আকুতিকে গ্রাহ্যই করেননি সাদা চামড়ার পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিন। শভিন তাঁর হাঁটু দিয়ে প্রায় ৯ মিনিট চেপে রাখেন ফ্লয়েডের ঘাড়। ঘটনাস্থলেই দমবন্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

এর পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মিনিয়োপোলিস, তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা আমেরিকায়। ‘ব্ল্যাক লাইভ ম্যাটার্স’ ও ‘আই কান্ট ব্রিদ’ ধ্বনি পৌঁছয় হোয়াইট হাউসের দোরগোড়াতেও। এমনকী ট্রাম্পকে সরিয়ে নিত হয় বাঙ্কারে। সেই বিক্ষোভ এখনও চলছে। চলছে মানুষের জীবনের জন্য সংগ্রাম। আর তারই জেরে এ বার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিল মিনিয়োপোলিস প্রশাসন। ভেঙেই দেওয়া হচ্ছে মিনিয়াপোলিস পুলিশ বিভাগ। তার জায়গায় নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য আসবে অন্য ব্যবস্থা। পুরো পুলিশ ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে নতুন করে সাজানো হবে তা।মিনিয়াপোলিস সিটি কাউন্সিলে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট লিসা বেন্ডার।

মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-কে লিসা বেন্ডার বলেছেন, পুলিশ ব্যবস্থাকে আমরা ভেঙে দিতে বদ্ধপরিকর। তার পর পুনর্গঠন করা হবে।জনসাধারণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নতুন মডেলে সমাজকে আরও নিরাপদ করার চেষ্টা করা হবে। মানুষ ও কমিউনিটির সুরক্ষার নতুন মডেল নিয়ে আমরা এই ডিপার্টমেন্ট ফের চালু করব।”

পাশাপাশি, কাউন্সিল সদস্য আলোন্দ্রা কানো টুইট করে জানিয়েছেন, “মিনেসোটা সিটি কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যে গরিষ্ঠ অংশের সম্মতি নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা রাজি হয়েছি, বর্তমানে মানুষের প্রতি পুলিশের যে ব্যবহার, তাতে এভাবে কাজ চলতে পারে না। পুলিশকে আরও অনেক বেশি সংবেদনশীল হতে হবে। বর্তমান পুলিশ ব্যবস্থার ইতি ঘটতে চলেছে।’’

ব্ল্যাক লাইভ ম্যাটার্স

পুলিশের বিরুদ্ধে মানুষের তুমুল ক্ষোভের জন্যই যে পুলিশি পরিকাঠামো ও ব্যবস্থাপনার খোলনলচে পাল্টে সেই ক্ষোভ কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, সেটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকেই।

বিক্ষোভকারীদের বহু দিনের দাবি ছিল, ‘ডিফান্ড দ্য পুলিশ’ অর্থাৎ তাঁদের উপর খরচ হওয়া অর্থ মানুষের উপকারে ব্যবহৃত হোক। পুলিশের পিছনে খরচ করার কোনও প্রয়োজন নেই। পুলিশ বিভাগ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কিছুটা তাই-ই বলে মনে করা হচ্ছে। মিনিয়াপোলিস প্রশাসনের এই ঘোষণার পরেই, নানা সামাজিক মাধ্যমে ‘ডিফান্ড দ্য পুলিশ’ পোস্টে ছেয়ে যায়।

মিনিয়াপোলিস এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে কি আন্দোলনকারীরা নিজেদের ‘জয়’ দেখে থেমে যাবেন নাকি জর্জের মৃত্যুকে সামনে রেখে ‘কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনেরও একই গুরুত্ব’ — এই মর্মে বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন, দেখার সেটাই। কারণ আমেরিকায় জর্জের ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং তা বহু দিন ধরে চলে আসা অমানবিকতার পরিচয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#george floyd, #minneapolis, #dismantle police

আরো দেখুন