মল থেকে রেস্তোরাঁ – ক্রেতাদের ভয় ভাঙাতে ব্যবস্থা
আনলক ওয়ানে আড়াই মাস পর শহরে খুলল শপিং মল। সাউথ সিটি, অ্যাক্রোপোলিস, কোয়েস্ট ও এলগিন রোড ফোরাম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁদের মলে হাজারের উপর ক্রেতা সমাগম হয়েছে। সংখ্যাটা অনেকটাই কম। তবে, করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তে এই সমাগমকে আশাব্যঞ্জক হিসেবেই দেখছেন মল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার অ্যাক্রোপোলিস মলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে এসেছিলেন চন্দ্রনাথ ভৌমিক। লাইনে দাঁড়াবেন না, তাই সকাল সকাল হাজির হন। আর পাঁচজনের মতো তিনিও বেশ ভয়ে ছিলেন। তবে শপিং মলে ঢোকা থেকে বেরোনো পর্যন্ত যে ভাবে করোনা বিধি মানা হয়েছে, তা সন্তোষজনক বলেই মনে হয়েছে ওই প্রৌঢ়ের।
চন্দ্রনাথ জানিয়েছেন, মলের লাইনে দাঁড়ানোর আগেই প্রত্যেককে তরল সাবান দিয়ে হাত ধুতে হয়েছে। তার পর থার্মাল স্ক্যানারে তাপমাত্রা পরীক্ষা। তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলে তবেই মিলেছে প্রবেশের অনুমতি। মলের দোকানগুলিতে এক সঙ্গে বেশি জনকে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, চলমান সিঁড়িতে দু’ধাপ অন্তর একজন করে ক্রেতার দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মলের শৌচালয় এবং ফাঁকা জায়গাতেও কঠোর ভাবে মেনে চলা হয়েছে সামাজিক দূরত্ব। জীবাণুনাশক ওষুধে ভেজানো কাপড় দিয়ে ঘন ঘন মোছা হয়েছে মলের প্রতিটা অংশ।
একটি বহুজাতিক বিপণি থেকে বাজার করে বেরোচ্ছিলেন চন্দ্রাবলী চক্রবর্তী পোদ্দার। বিপণি খোলার প্রথম দিন বাজার করতে আসা প্রসঙ্গে বললেন, ‘করোনার আতঙ্কে অনন্তকাল তো গৃহবন্দি থাকা যায় না। সাহস করে, উপযুক্ত সতর্কতা নিয়ে বেরোতেই হবে। খোলা বাজারের তুলনায় শপিং মল অনেক নিরাপদ।’ ভরসা রেখে আর পাঁচজনকেও শপিং মলে আসতে উৎসাহ দিয়েছেন প্রৌঢ় নীলাঞ্জন বাগচিও। তিনি বলেন, ‘আমি যখন ভরসা করে আসতে পেরেছি, তখন সবাই পারবেন।’ ঘরবন্দি থাকলে চলবে না। উপযুক্ত সতর্কতা নিয়ে রাস্তায় নামতেই হবে—এই বার্তাই দিয়েছেন দুই বন্ধু বিশাল রজক ও বেদান্ত। শপিং মল খোলার দিনই দু’জন মোবাইল কিনতে এসেছিলেন। দোকানে সামান্য ভিড় ছিল। তাই, দোকনের বাইরে সামাজিক দূরত্ব মেনে কিছুক্ষণ দাঁড়াতে হয়েছে তাঁদের।
প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে সাউথ সিটি মলের পক্ষ থেকে দীপ বিশ্বাস বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েকটা দিন সময় লাগবে। ক্রেতাদের ভয় ভাঙাতে কিছুটা সময় দিতেই হবে। এর জন্য আমরা তৈরি। তবে, সাউথ সিটিতে প্রথম দিন আশাব্যঞ্জক ক্রেতা সমাগম হয়েছে।’ এলগিন রোড ফোরামের দায়িত্বে থাকা উজ্জ্বল এবং কোয়েস্ট মলের সঞ্জীব মেহেরাও ধীরে চলো নীতির পক্ষেই মত দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, ‘লম্বা লাইন, কিংবা প্রচুর ক্রেতা সমাগম—কোনওটাই এখনই আমরা চাইছি না। ক্রেতারা ধীরে ধীরে ভরসা করে মলে আসুন, এটাই চাইব।’
সোমবার শহরের কোনও শপিং মলের স্টোরে একসঙ্গে ১০ জনের বেশি ক্রেতাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ঢোকার মুখে প্রত্যেকের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার।