করোনা সচেতনতায় নবান্নে হাজিরার নতুন নির্দেশ
সোমবার থেকে ৭০ শতাংশ কর্মচারী নিয়ে চালু হয়েছে সব সরকারি দপ্তর। রাজ্যের প্রধান সচিবালয় নবান্নেও উপস্থিতি বেড়েছে কর্মী-অফিসারদের। কিন্তু মঙ্গলবার সেই কর্মী হাজিরায় অনেকটাই লাগাম টেনে দিল রাজ্য সরকার। বেশির ভাগ কর্মীকেই বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে এদিন বিকেলে নির্দেশ জারি করে অর্থ দপ্তর। তাতে সামান্য জ্বর-সর্দি-কাশি থাকলেও কর্মী-অফিসারদের অফিসে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের সব অফিসেই এই নিয়ম কার্যকর হবে। এমনকী, যে কর্মী-অফিসারেরা চলতি ব্যবস্থা অনুযায়ী রোটেশনে অফিস করবেন, তাঁদেরও অফিসে নিজেদের মধ্যে অন্তত দু’মিটার দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কনটেনমেন্ট জোনে বসবাসকারী কর্মী-অফিসারদেরও অফিসে যেতে বারণ করা হয়েছে। এই মাপকাঠি অনুযায়ী অফিসে যাঁরা আসতে পারবেন না, তাঁদের বাড়ি থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে ই-অফিসে কাজ করতে বলেছে সরকার।
সতর্কতা বেড়েছে নবান্নের আমলা মহলেও। ইতিমধ্যে রাজ্য-সচিবালয়ের চার জন গাড়িচালকের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাই নবান্নে আধিকারিকদের গাড়ির চালকদের প্রত্যেকের কোভিড পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা বদলের পরিকল্পনাও করা হয়েছে, যাতে চালকরা বিশেষ মেলামেশা করতে না-পারেন। মুখ্যমন্ত্রীর ও তাঁর কনভয়ের সমস্ত গাড়ি আইসোলেশনে রাখারও পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন। সোমবার থেকেই এই ব্যবস্থা কার্যকরী হয়েছে। ১০০ শতাংশ কর্মী হাজিরার নির্দেশ জারি করে সোমবার থেকেই পুরোদমে কাজ শুরু করেছিল কলকাতা পুরসভা। এদিন নবান্নের নির্দেশের প্রেক্ষিতে এক পুরকর্তা বলেন, ‘বুধবার আমরাও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে হাজিরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
হাজিরা ছাড়াও কর্মী ও অফিসারদের মুখোমুখি বৈঠক এড়াতে বলা হয়েছে। টেলিফোন, ইন্টারকমে অথবা ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত আধিকারিকের নিজস্ব চেম্বার রয়েছে, তাঁদের প্রতিদিন অফিস আসতে হবে। বলা হয়েছে, ভিজিটর এলে দু’-তিন মিটার দূরে তাঁকে বসিয়ে কথা বলুন। লিফটে তিন জনের বেশি উঠবেন না। কম্পিউটারের কিবোর্ড, মোবাইল ফোন, পেন নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করুন। মাস্ক প্রত্যেককে বাধ্যতামূলক ভাবে পরতে হবে।
একাধিক আমলা যে কোনও চিঠি, ফাইলের ব্যাপারেও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছেন। অর্থসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী, পূর্তসচিব নবীন প্রকাশ, কৃষিসচিব সুনীল গুপ্তা, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের সচিব দুষ্মন্ত নারিয়েল অফিসকে নির্দেশ দিয়েছেন, জরুরি ফাইল বা নির্দেশিকা ছাড়া টেবিলে যেন কিছু পাঠানো না-হয়।