বাফটার শীর্ষপদে প্রথম বাঙালি কৃষ্ণেন্দু
আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলনের মধ্যেই আটলান্টিক মহাসাগরের অপর পাড়ে টেলিভিশন শিল্পের অন্যতম শীর্ষ সংগঠনের প্রধান পদে আসীন হতে চলেছেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি অফ ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন আর্টস (বাফটা)-এর শীর্ষপদে বসতে চলেছেন প্রবাসী বাঙালি কৃষ্ণেন্দু মজুমদার। বাফটার ৭৩ বছরের ইতিহাসে প্রথম কোনও কৃষ্ণাঙ্গ সংগঠনের শীর্ষপদে বসলেন। এছাড়া গত ৩৫ বছরের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ হিসাবে কৃষ্ণেন্দু বাফটার চেযারপার্সন হলেন। টিভি প্রোডিউসার হিসাবে পরিচিত কৃষ্ণেন্দু এর আগে আমেরিকার টেলিভিশন শিল্পের শীর্ষ পুরস্কার এমি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন। ভিডিও কনফারেন্সে বাফটার বার্ষিক সাধারণ সভায় কৃষ্ণেন্দুকে সংগঠনের শীর্ষপদে বসানোর বিষয়টি মনোনীত হয়। আগামী তিন বছর এই দায়িত্বভার সামলাবেন কৃষ্ণেন্দু। তবে, এর আগে ১৪ বছর বাফটার বিভিন্ন পদে আসীন ছিলেন এই বঙ্গসন্তান। বাফটার লার্নিং অ্যান্ড নিউ ট্যালেন্ট কমিটি, টেলিভিশন কমিটির সদস্য ছিলেন কৃষ্ণেন্দু। এছাড়া নয় বছর বাফটার বোর্ড অফ ট্রাস্টির সদস্য ছিলেন তিনি। গত একবছর ধরে ডেপুটি চেয়ারপার্সন হিসাবে দায়িত্বভার সামলেছেন তিনি।
কৃষ্ণেন্দুর জন্ম সাউথ ওয়েলসে। তাঁর বাবা-মা ছয়ের দশকে ভারত থেকে ব্রিটেনে পাড়ি দেন। কৃষ্ণেন্দুর বাবা ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের চিকিত্সক হিসাবে ৪০ বছরের বেশি সময় কর্মরত ছিলেন। ২০১২ সালে রিচার্ড ইর সঙ্গে যৌথভাবে স্বাধীন প্রযোজনা সংস্থা মি প্লাস ইউ খোলেন কৃষ্ণেন্দু। এই প্রযোজনা সংস্থার তৈরি কমেডি শো হফ দ্য রেকর্ড এমি অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয়। এছাড়া অপর টিভি সিরিজ আই অ্যাম সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছে। এছাড়া কমেডি ড্রামা সিক অফ ইট ও ডকুমেন্টারি সিরিজ দ্য মোনিং অফ লাইফের এগজিকিউটিভ প্রোডিউসার ছিলেন কৃষ্ণেন্দু। এছাড়া বাফটা মনোনীত সিরিজ অ্যান ইডিয়ট অ্যাব্রডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। বাফটার সঙ্গে জড়িত থাকার আগেও তিনি কয়েকটি সিনেমার প্রযোজনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
নতুন দায়িত্বভার নেওয়ার পর কৃষ্ণেন্দু বলেন, এই সম্মান পাওযার জন্য আমি গর্বিত। চলতি বছরে টেলিভিশন শিল্প এক কঠিন অবস্থার মুখে পড়েছে। কোভিড আতঙ্ক কেটে যাওয়ার পর আশা করব বাফটার প্রত্যেক সদস্য ও কর্মী টিভি শিল্পকে ফের আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনবেন। প্রথম অব্রিটিশ হিসাবে চেয়ারপার্সন হিসাবে মনোনীত হওযার বিষয়ে তিনি বলেন, সব ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গের মানুষকে নিয়ে আমাদের চলতে হবে। বৈচিত্র্য ও সকলকে এক জায়গায় নিযে আসার কাজ বাফটা এতদিন করে চলেছে। ভবিষ্যতেও বাফটা পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।