রাজ্যে চালু হচ্ছে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র
চাকরির ফর্ম ফিলআপ হোক কিংবা সরকারি প্রকল্পের আবেদন, সবটাই এখন অনলাইন কেন্দ্রিক। কিন্তু অনলাইনে এসব কাজ করতে অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমজনতাকে। বাড়িতে কম্পিউটার না থাকায় যেতে হচ্ছে সাইবার ক্যাফেতে। সেখানে যাঁর কাছ থেকে যেমন খুশি টাকা লুটছেন ক্যাফে মালিকরা। এই সমস্ত সমস্যার সমাধানে এবার প্রতিটি ডিএম, এসডিও, বিডিও অফিস, গ্রন্থাগার এমনকি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও সু-স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও (উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র) সার্ভিস ডেলিভারি পয়েন্ট খোলার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার, যার নাম দেওয়া হয়েছে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র (বিএসকে)। এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য ইতিমধ্যে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর জেলা শাসকদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলা শাসক অভিষেক তেওয়ারি বলেন, বিএসকে চালু নিয়ে সরকারি নির্দেশিকা এসেছে। দ্রুত সেগুলি চালু করা হবে। আলিপুরদুয়ারের জেলা শাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা বলেন, এর ফলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। সরকারি নির্দেশিকা মোতাবেক ওই কেন্দ্রগুলি যাতে যথাসময়ে চালু করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
বর্তমানে সরকারি প্রকল্পের পরিষেবা সাধারণের নাগালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমন সার্ভিস সেন্টার (সিএসসি) চালু রয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলায় প্রায় ৭০০ সিএসসি রয়েছে। রাজ্যে এই সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। সিএসসিগুলি কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদিত। তবে, সেখানে রাজ্য সরকারের জন পরিষেবামূলক কাজ অনলাইনে করে দেওয়া হয়। রয়েছে ই-টেন্ডারের ব্যবস্থাও। বিনিয়মে সিএসসিগুলি নির্ধারিত টাকা নিয়ে থাকে। এবারে রাজ্যের তরফে একই ধাঁচের সমান্তরাল ব্যবস্থা চালুর পেছনে আলাদা কোনও উদ্দেশ্য আছে কি না তা অবশ্য পরিষ্কার নয়। তবে, এতে রুটিরুজি হারানোর অশনিসংকেত দেখছেন সিএসসি-র কর্ণধাররা। ওয়েস্টবেঙ্গল সিএসসি ওয়েলফেয়ার সোসাইটির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সভাপতি সুব্রত সরকার বলেন, আমরা রাজ্যের সঙ্গেই থাকতে চাই। রাজ্যের প্রকল্পগুলির কাজ আমাদের এখান থেকে হয়। বিএসকে চালু নিয়ে আপত্তি নেই। তবে তাতে আমাদেরই শামিল করা হোক। নয়তো বহু মানুষের রুটিরুজিতে টান পড়বে।
সরকারি সূত্রে খবর, গোটা রাজ্যে ২৭৪৪টি বিএসকে গড়া হবে। তার মধ্যে রয়েছে ৩৪২টি বিডিও অফিস, ৬৬টি এসডিও অফিস, ২৩টি ডিএম অফিস ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে ১৫০০টি এবং ৮১৩টি গ্রন্থাগার। প্রস্তাবিত সার্ভিস ডেলিভারি পয়েন্টে দুজন করে কর্মী রাখার কথা বলা হয়েছে। ইন্টারনেট পরিষেবা সহ দুটি করে কম্পিউটার ও স্ক্যানার সহ প্রিন্টার সেখানে থাকবে। ১৫ জুলাইয়ে আগেই বিএসকেগুলি চালু করার নির্দেশ রয়েছে। তবে সেখান থেকে নিখরচায় সুবিধা মিলবে কি না স্পষ্ট হয়নি।
মালবাজারের মহকুমা শাসক শান্তনু বালা বলেন, এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। নাগরাকাটার বিডিও স্মৃতা সুব্বা বলেন, প্রশাসনিক ভিডিও কনফারেন্সেও বিএসকে চালু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের মেন্টর গ্রুপের অন্যতম আহ্বায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, সরকারি পরিষেবা পেতে গিয়ে অনলাইনের কাজকর্ম অনেকের কাছেই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। সার্ভিস ডেলিভারি পয়েন্ট চালু হলে সাধারণ মানুষ যে উপকৃত হবেন তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।