করোনা আবহেই বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি, বৈঠকে মুকুল-শাহ
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ডাকে গত বুধবারই দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন মুকুল রায়। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা সব্যসাচী দত্ত। সেখানে বৃহস্পতি ও শুক্রবার মুকুলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন শাহ। আগামী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে তাঁদের মধ্যে। বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দু’দফায় মুকুলের সঙ্গে একান্তে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মুকুল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হতে পারেন বলে বেশ কিছুদিন ধরে জল্পনা চলছে গেরুয়া শিবিরে। বিজেপির একাংশ মনে করছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মুকুলের বৈঠকে সে প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মুকুল রায়কে দিল্লিতে তলব করা হল। নিশ্চয়ই জরুরি কোনও বিষয়। নিছক আগামী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতির জন্য নয়। তা হলে দিলীপ ঘোষেরও ডাক পড়ত।’ যদিও মুকুল এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘অমিতজির সঙ্গে দু’দিন বৈঠক হয়েছে। আগামী বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা বলতে পারি, বাংলা নিয়ে অমিত শাহরা খুবই সিরিয়াস।’
রাজ্য বিজেপিতে মুকুলের গুরুত্ব ইদানীং কিছুটা বেড়েছে। দলের নতুন কমিটিতে মোর্চা সভাপতিরা প্রায় সবাই তাঁর ঘনিষ্ঠ। তা ছাড়া সরাসরি মুকুলের হাত ধরে বিজেপিতে আসা বিধাননগর পুরসভার প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্তকে দলের নতুন কমিটিতে অন্যতম সম্পাদক করা হয়েছে। আগামী বিধানসভা ভোটে মুকুলের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে যে শাহরা ব্যবহার করতে চান, সেটা মোটের উপর স্পষ্ট। সব ঠিকঠাক চললে ২০২১-এই বিধানসভা নির্বাচন। এই অবস্থায় শাহরা চাইছেন, দেরি না করে দলের রাজ্য নেতারা এখন থেকেই কোমর বেঁধে নেমে পড়ুন।
সম্প্রতি ভার্চুয়াল জনসভা থেকে কার্যত বাংলায় ভোটের দামামা বাজিয়ে দিয়েছেন অমিত। বিজেপির একাংশ মনে করছে, বিধানসভা ভোটের রণনীতি ঠিক করার আগে মুকুলের পায়ের তলার মাটি শক্ত হওয়া প্রয়োজন। কারণ, পার্টিতে বা কেন্দ্রীয় সরকারে চেয়ার না থাকলে মুকুলের পক্ষে বিধানসভা ভোটে ছোটাছুটি করতে সমস্যা হবে। এই আবহ থেকেই মুকুলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা। বিজেপির অনেকে মনে করছেন, মুকুলকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করা হতে পারেন। তাতে পুলিশ-প্রশাসনের উপর তাঁর প্রভাব বাড়বে। মুকুলের সঙ্গে সব্যসাচীর দিল্লি যাওয়াও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শনিবার কলকাতায় ফিরেছেন মুকুলরা।