আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

বলিভিয়ায় ভার্চুয়াল ক্লাসে ‘সিক্রেট সুপারহিরো’, উন্মাদনা

June 16, 2020 | 2 min read

কম্পিউটার অন করতেই স্ক্রিনজুড়ে স্পাইডারম্যান। পোড়খাওয়া চোখে ভুরু কুঁচকে আপনি প্রশ্ন তুলতেই পারেন, নয়া পিটার পার্কার এত নাদুসনুদুস হল কবে? কী করে? জিজ্ঞাসা জিইয়ে রেখে পরদিন পর্দাজুড়ে সুপারহিরো ফ্ল্যাশ। তাঁর চেহারার সঙ্গে গতদিনের স্পাইডারম্যানের চেহারার মিল খুঁজতে যাবেন যেই, অমনি আপনাকে আঁতকে দিয়ে হাজির হবেন গথাম সিটির রক্ষাকর্তা-বিধাতা ব্রুস ওয়েইন ওরফে ব্যাটম্যান। এরপর আর লুকোনোর পথ নেই। লজ্জার মাথা খেয়ে স্বীকার করতেই হবে, তিনজন সুপারহিরো আলাদা কেউ নন। নেপথ্যে অভিনয় করছেন একজনই। তিনি জর্জ মানোলো ভিলারয়েল। নেশায় অভিনেতা, পেশায় শিক্ষক। বলিভিয়ার ওয়েলথিয়ারের সান ইগনাসিও ক্যাথলিক স্কুলে বাচ্চাদের হাতের কাজ শেখান তিনি। ভার্চুয়াল ক্লাস আর একটু রঙিন করতেই তাঁর এই সাজবদল।

লকডাউনের জেরে স্কুল বন্ধ। শুরু হয়েছে ভার্চুয়াল ক্লাস। কিন্তু সারাদিন ঘরবন্দি হয়ে থাকার পর কাঁহাতক লেখাপড়ায় মন বসে! হলই বা আর্টের কাজ। তাও কি প্রতিদিন পোষায়? শিশুমনের এই গোপন অনুযোগ ধরে ফেলতে দেরি করেননি জর্জ। চট করে মিষ্টি ফন্দি এঁটে ফেলেন তিনি। আজন্ম সুপারহিরো মুভির পোকা তিনি। ডিসি হোক কিংবা মার্ভেল। কোনও বাছবিছার নেই। নেশা এতটাই যে, আয়রন ম্যান থেকে শুরু করে সুপারম্যান—দেওয়ালজুড়ে থরে থরে মাস্ক আর কস্টিউম টাঙানো। জর্জ ঠিক করেন, প্রতিদিন নতুন নতুন সুপারহিরো সেজে ক্যামেরার সামনে বসলে তো মন্দ হয় না! সেই শুরু। এরপর খুদে পড়ুয়াদের জন্য রোজ রোজ নতুন চমক। প্রাণ ফিরে পায় ভার্চুয়াল ক্লাস। বাড়তে থাকে হাজিরা। এমনকী মোবাইল নিয়ে দুই খুদের কাড়াকাড়ির ঘটনাও আকছার ঘটছে বলে জানিয়েছেন জর্জ।

কিন্তু সুপারহিরো-বেশে ক্লাস চালাতে বেগ পেতে হয় না? ঠোঁট বেঁকিয়ে জর্জ বলেন, মোটেও না। রীতিমতো নিয়মশৃঙ্খলা বজায় থাকে আগাগোড়া। শুরুতে ওয়ার্ম আপ। তারপর নিয়ম মেনে প্রার্থনা সঙ্গীত। সবশেষে আবহ তৈরি করতে বাজানো হয় শিহরণ-জাগানো সুপারহিরো মিউজিক। হান্স জিমার, জেমস হাওয়ার্ড নিউটনের সুরে ক্লাসের কার্টেন উঠে যায়। শুরু হয় হাতের কাজ। জ্যামিতির আঁকিবুঁকি।

৪৫ জন খুদে পড়ুয়াকে নিয়ে এভাবেই দিব্যি জমে উঠেছে জর্জের ভার্চুয়াল ক্লাস। বাচ্চাদের সঙ্গে সময় পেলেই কথা বলুন, অনুরোধ জর্জের। কারণ আলাপ নিবিড় হলেই একজন শিশু নিজেকে উজাড় করে দিতে শেখে। জর্জ জানেন, মহামারী করোনা জীবন থেকে অনেক আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু এরপর যে নতুন দুনিয়া আসতে চলেছে, তাতে বদলে যাবে শিক্ষাদানের প্রথাগত মডেল। লেখাপড়ায় হয়তো ভার্চুয়াল মাধ্যমই স্থায়ী হতে চলেছে। ইঙ্গিত জর্জের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bolivia, #virtual class, #superhero

আরো দেখুন