চারটি স্মার্টফোনে কাজ করবে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর
হতেই পারে আপনার হাতে দু’টো স্মার্টফোনের দ্বিতীয় নম্বরটা সবাইকে জানাতে চান না আপনি। কিন্তু সবার জানা যে নম্বরের হ্যান্ডসেটে হোয়াটসঅ্যাপ রয়েছে, তাতে টাওয়ার মিলছে না। ফলে সেই মুহূর্তে জরুরি মেসেজ করতে হলে ‘গোপন’ নম্বরটা আর গোপন থাকবে না।
এই দ্বিধা কাটিয়ে গ্রাহককে আরও উন্নত মানের পরিষেবা দিতে ফেসবুকের মালিকানাধীন জনপ্রিয় মেসেঞ্জার প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ মাল্টি-ডিভাইস সাপোর্ট আনার দিকে এগোচ্ছে। অর্থাৎ, আপনার চারটি স্মার্টফোনে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর কাজ করবে।
২০১৯ সালের শেষের দিকে প্রথমে আইওএসের বিটা ভার্সান ২.১৯.১২০.২০-এ এই পরিষেবা চালু হবে বলে দাবি করেছিল একাধিক ওয়েবসাইট। শেষ পর্যন্ত তখন চালু না হলেও খুব শীঘ্রই চারটি হ্যান্ডসেটে একই সঙ্গে একই নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ পরিষেবা ব্যবহার করার সুবিধা চালু হতে চলেছে বলে দাবি করেছে ওয়েবসাইট ডব্লিউএবিটাইনফো। যদিও তারা জানিয়েছে, বৈশিষ্ট্য তৈরির কাজ এখনও চলছে এবং তা বিটা টেস্টিং-এর পর্যায়েও তা এখনও পৌঁছোয়নি।
মাল্টি-ডিভাইস সাপোর্ট তো দূরের কথা, একই নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ এর আগে কোনও দিনই দু’টো হ্যান্ডসেটেই ব্যবহার করা যায়নি। দ্বিতীয় হ্যান্ডসেটে তা ইনস্টল করতে গেলেই প্রথম সেট থেকে তা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। যে যে হ্যান্ডসেটে ডুয়াল অ্যাপের পরিষেবা রয়েছে, সেখানে একই সঙ্গে দু’টি পৃথক নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ ইনস্টল করা গেলেও, কোনও ভাবেই এতদিন একই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দু’টো হ্যান্ডসেটে ব্যবহারের সুবিধা ছিল না। ডব্লিউএবিটাইনফো’র তরফে এক স্ক্রিনশট টুইট করে জানানো হয়েছে, নতুন বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করতে ওয়াই-ফাই কানেক্টিভিটি ব্যবহার করতে হবে। হামেশাই নিজেদের বৈশিষ্ট্য উন্নত করতে থাকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জার প্ল্যাটফর্ম। এই লকডাউনের বাজারেও মাসকয়েক আগেই তারা গ্রুপ ভিডিয়ো কলের যোগদানকারীর সংখ্যা বাড়িয়েছে।
ডব্লিউএবিটাইনফো আরও জানিয়েছে, স্ন্যাপচ্যাটের মতোই কিউআর কোড স্ক্যান করে নতুন কোনও নম্বর যোগ করার বৈশিষ্ট্য ইতিমধ্যেই তাদের প্ল্যাটফর্মে অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস, দু’টি অপারেটিং সিস্টেমেই বিটা ভার্সান টেস্টিং শুরু হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই সবার জন্যই তা খুলে দেওয়া হতে পারে।
‘সেলফ ডেস্ট্রাক্টিং মেসেজ’ বা ‘ডিলিট মেসেজ’-এর বৈশিষ্ট্যও হোয়াটসঅ্যাপ প্ল্যাটফর্মে আনা হতে পারে বলে জল্পনা চলছে। ওই বৈশিষ্ট্য আগে স্ন্যাপচ্যাটেও ছিল। যেখানে প্রাপক মেসেজ দেখার পরেই তা ‘ডিলিট’ হয়ে যেত। তবে হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষেত্রে তার জন্য প্রেরক ‘নির্দিষ্ট’ সময় বেঁধে দিতে পারবেন বলে দাবি করেছে ডব্লিউএবিটাইনফো। যা দেখা হোক বা না-হোক, ওই সময়ের পরে তা আপনা থেকেই মুছে যাবে প্রাপকের মোবাইল থেকে। ‘স্টারড’ মেসেজ ছাড়া বাকি সব মেসেজ একসঙ্গে ডিলিট করার সুবিধাও আনতে চলেছে হোয়াটসঅ্যাপ। যার জেরে, একটি একটি করে মেসেজ ডিলিট করার বিরক্তি থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন ব্যবহারকারীরা।
ওয়েবসাইটটির তরফে আরও জানানো হয়েছে, ইন-অ্যাপ ব্রাউজার এবং তারিখের ভিত্তিতে কোনও মেসেজ খোঁজার বৈশিষ্ট্য চালু করার পথেও এগোচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ। তবে এই বৈশিষ্ট্য এখনও আলফা টেস্টিং স্তরে থাকায়, তা কার্যক্ষেত্রে আসতে সময় লাগবে। ব্যবহারকারীদের মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের স্টোরেজের পরিধি বাড়ানোর জন্যেও হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ চেষ্টা চালাচ্ছেন।
আরও যে দু’টো বৈশিষ্ট্য আগামী দিনে হোয়াটসঅ্যাপ তাদের প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করতে পারে, তা হল, শেয়ারচ্যাট ভিডিয়ো দেখার সুযোগ এবং ওয়েবে ছবি খোঁজার সুবিধা। আইওএস-এর বিটা ভার্সানে ইতিমধ্যেই এর পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। প্ল্যাটফর্মে একাধিক বৈশিষ্ট্য চালুর বিষয়ে জল্পনা শুরু হলেও এ নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ।