অর্থ কমিশনের কাছে থেকে ৪৯০০ কোটি না আসায় থমকে গিয়েছে উন্নয়ন
লক্ষ্য গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন। বরাদ্দ ৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অধীনে পশ্চিমবঙ্গের জন্য এই টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ, অর্থবর্ষ শুরুর পর আড়াই মাস কেটে গেলেও পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের এক টাকাও আসেনি রাজ্যের ঘরে। থমকে গিয়েছে গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নের কাজ। এর মধ্যে বর্ষা এসে যাওয়ায় চিন্তা বাড়ছে পঞ্চায়েত দপ্তরের। বিষয়টি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা ছাড়া কিছু নয় বলে মনে করছেন রাজ্য সরকারের কর্তাব্যক্তিরা।
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের এই টাকার ৭০ শতাংশ খরচ করার কথা গ্রাম পঞ্চায়েতের। আর পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের জন্য বরাদ্দ হয় ১৫ শতাংশ করে। কিন্তু রাজ্য সরকারের হাতে এখনও কিছুই না আসায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থার কোথাও কোনও টাকা পাঠানো যায়নি। এই টাকায় রাস্তাঘাট, কালভার্ট, ব্রিজ, পানীয় জল, বিল্ডিং তৈরি হওয়ার কথা। টাকা না আসায় সেইসব কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।
পঞ্চায়েত দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চতুর্দশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচ করতে পারত শুধুমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সেই টাকা খরচের কোনও অধিকার ছিল না। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই ব্যবস্থা পরিবর্তনের দাবি তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে ওই টাকা পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদকে খরচ করার সুযোগ দেওয়ার আর্জিও জানিয়ে ছিলেন। তাঁর দাবি মেনেই দুই স্তরে ১৫ শতাংশ করে টাকা খরচের অনুমতি দেওয়া হয়।
গত ২০১৯-’২০ আর্থিক বছরে রাজ্যকে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের ৩ হাজার কোটি টাকা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সংশ্লিষ্ট সব কাজের ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ দিতে হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গকে। সেই কাজের উপর ভিত্তি করেই চলতি অর্থবর্ষে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক।
বর্তমানে রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৪২। এর মধ্যে পার্বত্য এলাকার ১১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্বাচিত বোর্ড না থাকায় মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী তারা এই টাকা পাবে না। হিসেব বলছে, বাকি প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য বরাদ্দ হবে গড়ে এক থেকে দেড় কোটি টাকারও বেশি। রাজ্যের ৩৪২টি পঞ্চায়েত সমিতির হাতে আসবে ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা করে। প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা করে পাবে ২২টি জেলা পরিষদ। যা ব্যয় করা হবে গ্রামীণ পরিকাঠামো তৈরির কাজে। কিন্তু এখনও কোনও টাকা না আসায় কী করে সেই কাজ সময়ে শেষ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।