অটিজম মানসিক প্রতিবন্ধকতা নয়
অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার ( এ এস ডি) একটি জটিল স্নায়বিক বিকাশ সংক্রান্ত রোগের শ্রেণী যা সামাজিক বিকলতা, কথা বলার প্রতিবন্ধকতা, এবং সীমাবদ্ধ, পুনরাবৃত্তিমূলক এবং একই ধরনের আচরণ দ্বারা চিহ্নিত হয়। এটা একটি মস্তিষ্কের রোগ যা সাধারণত: একজন ব্যক্তির অন্যদের সাথে কথা বলার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।
শুধু ভারতেই অটিজমে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা অন্তত ১ কোটি। প্রতি ৬৮টি শিশুর মধ্যে একটিতে ধরা পড়ে অটিজম। শিশুরা মোটামুটি ৩ বছর বয়সের আগে তেমন ভাবে কথা বলতে শেখে না বলে অটিজম ধরাই পড়ে অনেক দেরীতে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের প্রথমে মানসিক প্রতিবন্ধী ভাবা হয়। তাই অধিকাংশেরই চিকিৎসা হয় না। হলেও ভুল চিকিৎসা হয়।
আসুন দেখে নেওয়া যাক অটিজম সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা ও আসল বাস্তব
ভুল ধারনাঃ অটিজম একটি মানসিক ব্যাধি।
বাস্তবঃ অটিজম একটি স্নায়বিক সমস্যা যার ফলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ব্যাহত হয়। এটি কোনও মানসিক ব্যাধি নয়।
ভুল ধারনাঃ অটিজম শুধু ছেলেদেরই হয়।
বাস্তবঃ যদিও দেখা গেছে যে অটিজমে ছেলেরাই বেশী আক্রান্ত হয়, কিন্তু এই রোগ ছেলে বা মেয়ে উভয়েরই হতে পারে।
ভুল ধারনাঃ অটিজম কখনও সারে না এবং এই রোগের কোনও চিকিৎসা নেই।
বাস্তবঃ বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি এবং আচরণগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই রোগের সাথে যুঝে ওঠা সম্ভবপর। অধিকাংশ শিশুই তার ফলে স্বাভাবিক ভাবে বড় হয়ে ওঠে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে সক্ষম হয়। অটিজম রোগীরা সাধারণত অত্যন্ত বুদ্ধিমান হবার ফলে তাঁদের পছন্দের বিষয়ে সেরা হয়ে উঠতে পারে।
ভুল ধারনাঃ অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা কোনও দিন কথা বলা শিখতে পারে না।
বাস্তবঃ ঠিক সময় চিকিৎসা শুরু করা গেলে তাঁদের বাক্যালাপের বিকল্প উপায় শেখানো সম্ভব।
ভুল ধারনাঃ সকল শিশুদের ক্ষেত্রেই অটিজমের উপসর্গ একরকম হয়।
বাস্তবঃ অটিজম একরকমের স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার, অর্থাৎ এর উপসর্গসমূহ বিভিন্ন কম্বিনেশনে বা মিশ্রণে দেখা যায় যা ব্যক্তি-বিশেষে আলাদা আলাদা প্রভাব ফেলে। দুজন শিশুর প্রতিকূলতা কখনই একরকম হতে পাররে না।
ভুল ধারনাঃ একজন চিকিৎসকের পক্ষে অটিজম রোগটির ব্যাপারে জানাটা খুবই স্বাভাবিক।
বাস্তবঃ চিকিৎসা জগতের সামান্য একটা অংশ এই রোগ সম্পর্কে জানেন। অধিকাংশ ডাক্তারেরই অটিজমের যথার্থ জ্ঞান এবং চিকিৎসা ক্ষমতা নেই। একজন দক্ষ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের ব্যাপারে যথেষ্ট খোঁজ খবর নিয়ে তবেই তার কাছে নিজের সন্তানকে নিয়ে যাবেন।