দু’বছর আগেও কেন রিয়ার সঙ্গে উঠে এসেছিল মহেশ ভট্টর নাম?
রিয়া চক্রবর্তী । সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই যার নাম উঠে আসছে বারবারই। তবে এই প্রথম বার নয়। প্রায় দু’বছর আগেও হঠাৎ করেই পেজ থ্রির হেডলাইন কেড়েছিলেন এই বাঙালি মেয়ে। কারণ,মহেশ ভট্ট।
২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ‘ভাটসাব’-এর ৭০ বছরের জন্মদিনে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেন রিয়া। রিয়ার বুকের কাছে মহেশের মাথা, চোখ বন্ধ। মুখে মিষ্টি হাসি, দুজনেরই। ক্যাপশনে লেখা, “শুভ জন্মদিন মাই বুডঢা। তুমি আমায় ভালবাসায় জড়িয়েছ, ভালবাসা কী তা তুমিই শিখিয়েছো… সারাজীবনের জন্য আমার বন্ধ হয়ে যাওয়া পাখা মেলতে শিখেছি তোমারই কারণে। তুমি সেই আগুন যে আগুন প্রতিটি আত্মাকে উদ্দীপ্ত করে। আই লাভ ইউ”।
চোখে আতসকাচ লাগিয়ে রাখা পাপারাৎজির নজর এড়ায়নি এই পোস্ট। নজর এড়ায়নি নেটাগরিকদেরও। শুরু হয় গুঞ্জন। ২৬-এর রিয়ার ৭০ -এর মহেশের জন্য এ হেন পোস্টে কমেন্ট আসতে থাকে, “তোমরা কি সম্পর্কে রয়েছ?” রাতারাতি তাঁদের সেই ছবি জায়গা করে নেয় পেজথ্রির লিড স্টোরিতে।
ইন্ডাস্ট্রি ধরেই নেয় মহেশের জীবনে নতুন বসন্ত এই বাঙালী মেয়ে। রিয়া আর মহেশ কন্যা আলিয়া প্রায় একই বয়সী হওয়ায় ওঠে সমালোচনার ঝড়। যদিও পরে সেই পোস্টের আর হদিশ মেলে নি। রিয়াই সেই পোস্ট মুছে দিয়েছিলেন নাকি অন্য কোনও কারণ, তা আজও অজানা।
এর ঠিক দু’দিন পর। সেপ্টেম্বরের ২২ তারিখ। মহেশের সঙ্গে আরও একটি পোস্ট করেন রিয়া। রিয়ার এই পোস্টে যেন নড়ে যায় বলিউড। কিশোর কুমারের লিপে ‘অমর প্রেম’ ছবির সেই বিখ্যাত গানের কয়েকটি লাইন…
“তু কউন হ্যয়, তেরা নাম হ্যয় কেয়া… সীতা ভি ইহা বদনাম হুয়ি …”
সঙ্গে লেখা, “দূষিত হৃদয় থেকে আসা ট্রোল যদি নোংরামো তে পরিপূর্ণ হয় তবে আমাদের অন্ধকার যুগ থেকে বেরিয়ে আসার যাবতীয় দাবী মিথ্যে।”
মিডিয়ার কাছেও মুখ খোলেন রিয়া। প্রেমের গুঞ্জন, অসমবয়সী সম্পর্ক, ইত্যাদিকে চুপ করিয়ে দিয়ে রিয়া বলেন, “ছি! এই মানসিকতা! উনি আমার বাবার মতো”। তাঁর ঠিক এক মাস পরেই অক্টোবরে রিয়ার একটি ছবি মুক্তি পায়, নাম ‘জলেবি’। প্রযোজক মুকেশ ভট্ট এবং চিত্রনাট্যকার মহেশ ভট্ট। রিয়া আর মহেশের প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে বলিপাড়ার অনেকেই তখন মুখ টিপে বলেছিল, “এ সব পাবলিসিটি সটান্ট ‘ বলিউডে খবরের স্থায়িত্ব বেশীদিন না।সে গসিপই হোক বা কলঙ্ক । তাই দিন যত যেতে থাকে মহেশ-রিয়ার ‘প্রেম’-এর খবরও ফিকে হতে থাকে।
রিয়ার জীবনেও আগমন হয় সুশান্তের। কিন্তু গত কদিন ধরে লেখিকা সুর্হিতা সেনগুপ্তর এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকার আচমকাই সামনে নিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি গোপন তথ্য।
লেখিকা বলেছেন, ‘সড়ক ২’তে অভিনয় করতে চাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে সুশান্ত ছুটে গিয়েছিলেন মহেশ ভট্টর কাছে। তাঁর মানসিক অস্থিরতা দেখে মহেশ ভট্ট নাকি বলেই ফেলেছিলেন, এ তো আর এক পরভিন ববি। আদরের রিয়াকে এখনই এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন ‘ভাটসাব’। রিয়া তাও হাল ছাড়েননি। কিন্তু শেষের বেশ কয়েক দিন চারিদিকে কন্ঠস্বর শোনা, ছায়ামূর্তি দেখে সুশান্তের চিৎকার করে ওঠা… ভয় পাইয়ে দিয়েছিল রিয়াকে। কি করবেন? জানতে ছুটে গিয়েছিলেন মহেশ ভট্টর কাছে। মহেশ নাকি এ বারেও বলেছিলেন, এই সম্পর্কে থাকলে রিয়া পাগল হয়ে যাবেন খুব শীঘ্রই। এর পরেই নাকি সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন রিয়া।
ভট্ট পরিবারের আর এক সন্তান আলিয়া ভট্ট সুশান্তকে চিনতেও পারেননি। তাই কর্ণ জোহর যখন একটি প্রশ্নে আরও দুই তারকার সঙ্গে সুশান্তের নাম জুড়ে দেন, তখন তাচ্ছিল্যের সঙ্গে আলিয়া বলে ওঠেন, “সুশান্ত! সেটা কে?” সুশান্ত নেই কয়েকদিন হল। খবরের ভিড়ে তাঁর স্মৃতিও হাল্কা হবে ক্রমশ। তবে আপাতত তাঁর মৃত্যুতে ঝড় উঠেছে বলিউডে। বলিউড কি শুধুই নেপোটিজমের আখড়া? প্রশ্ন তুলেছেন বলিস্টারেরাই। উত্তর জানা নেই কারও..