ব্যর্থ দিল্লী পুলিশ, জামিন জঙ্গিযোগে অভিযুক্ত ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহের
দুই হিজবুল (Hizbul Mujahideen) জঙ্গিকে নিজের গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে এ বছরের শুরুতে গ্রেফতার হওয়া জম্মু-কাশ্মীরের ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহের (Devender Singh) বিরুদ্ধে কোনো চার্জশিট দিতে পারল না পুলিশ। ফলে দিল্লির একটি আদালতে তাঁর জামিন হয়ে গেল।
দেবেন্দ্র ছাড়াও, এই ঘটনায় ইরফান শাহি মীর নামক আরও একজনের জামিন হয়ে গিয়েছে। তাঁদের আইনজীবী এমএস খান জানিয়েছেন যে ৯০ দিন পেরিয়ে গেলেও এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো চার্জশিট দিতে পারেনি দিল্লি পুলিশের (Delhi Police) বিশেষ সেল।
ঘটনাটি জানুয়ারির। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামের ওয়ান পো এলাকায় একটি গাড়ি আটকায় পুলিশ। ওই গাড়িতে তিন জঙ্গির সঙ্গে ছিলেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহ। সেটি দেবেন্দ্রর ব্যক্তিগত গাড়ি ছিল।
গাড়িতে ধৃত তিন জঙ্গির মধ্যে ছিল হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার সৈয়দ নাভিদ মুস্তাক ওরফে বাবু এবং রফি রাঠের। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর দক্ষিণ কাশ্মীরের আপেল বাগানে ট্রাকচালকদের খুনে মূল অভিযুক্ত এই নাভিদ মুস্তাক।
এ ছাড়া ধরা পড়েন মীরও, যিনি দেবেন্দ্রর সঙ্গেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। এই মীর পেশায় আইনজীবী ছিলেন। পরে জঙ্গি দলে নাম লেখান।
তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছিলেন, জম্মু-কাশ্মীর হাইওয়ের উপর বানিহাল টানেল পার করিয়ে দেওয়ার জন্য ১২ লক্ষ টাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল দেবেন্দ্রর। তিনি নিজে গাড়িতে থাকলে কেউ আটকাবে না, এই ভেবেই জঙ্গিদের সঙ্গে সওয়ার হয়েছিলেন।
দেবেন্দ্র অবশ্য দাবি করেন, ওই জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতেই তিনি একই গাড়িতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, ‘‘পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থার কাউকেই নিজের পরিকল্পনার কথা জানাননি দেবেন্দ্র।’’
তদন্তে আরও উঠে আসে যে এই প্রথম নয়, আগে আরও অন্তত পাঁচটি ক্ষেত্রে জঙ্গিদের সাহায্য করেছেন দেবেন্দ্র। এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বানিহাল টানেল পার করে জঙ্গিদের জম্মুতে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন।
জানুয়ারিতে এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছিলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা ঘটনার সঙ্গে দেবেন্দ্র যোগ রয়েছে কি না, সেটার তদন্তের দাবি জানান তিনি।
তবে দিল্লি পুলিশ দেবেন্দ্রের বিরুদ্ধে চার্জশিট না দিতে পারলেও বর্তমানে তিনি জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-এর হেফাজতে রয়েছেন। এনআইএ অবশ্য জানিয়েছেন দেবেন্দ্রর বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। শীঘ্রই তারা চার্জশিট দেবে।