কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

যুদ্ধ নয় শান্তি চাই – বার্তা কলকাতার চীনাপাড়ার

June 20, 2020 | 2 min read

চলতি বছরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ধরে পূর্ব লাদাখে উত্তেজনা তৈরী হয়ে রয়েছে । কদিন আগের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আগেও ৫ মে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে হাতাহাতি হয়েছে দুই সেনার মধ্যে।

এর পর থেকেই গত এক মাস ধরে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে এলএসি-র দু’পারে। দু’দিকেই চলেছে প্রস্তুতি, সেনা সমাবেশ । সেই উত্তেজনা প্রশমনে বেশ কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে দু’পক্ষে। এমনকি সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার থেকেই উত্তেজনা প্রশমন করতে পিছিয়ে আসার কথা ছিল দু’পক্ষের সেনারই । 

কিন্তু তার মধ্যেই ১৫ই জুন রাতে গালওয়ান নদীর তীরে শুরু হয়ে যায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ । ৫৩ বছর আগে নাথুলা এবং চোলাতে  প্রকৃত অর্থে শেষ বড় সংঘর্ষ হয় । তারপর এই পর্যায়ের সংঘর্ষ আর কখনও হয়নি । এখনও পর্যন্ত অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে ওই সংঘর্ষে ।

কলকাতার ট্যাংরার চীনা বসতি কলকাতার অন্যতম ঐতিহ্য। বহু বছর আগে চিনের বহু মানুষ কর্মসূত্রে বা ব্যবসা সূত্রে এখানে চলে আসেন । আর তারপরে সন্তান-সন্ততিরা নিয়ে এখানেই থেকে যান । কালক্রমে জায়গাটির নাম হয় চায়না টাউন।  সেখানকার আদ্যন্ত ভারতীয় এই চীনা মানুষরা চান অবিলম্বে শান্তি ফিরে আসুক। 

যুদ্ধ নয় শান্তি চাই – বার্তা কলকাতার চীনাপাড়ার

একের পর এক রেস্টুরেন্ট, তার মধ্যেই গুঁজে থাকেন এখানকার বাসিন্দারা। বেশীরভাগেরই জন্ম শহরের বুকেই। তবে অনেকেরই আত্মীয় স্বজন আজও চীনেই থাকেন। জন্মসূত্রে ও বসবাসের কারণে এই মানুষগুলোর কাছে ভারতই সব ।

তবু টান তো থেকেই যায় চীনের জন্য। ৬২ বছরের মাইকেল চ্যাং-এর  চায়না টাউনে জন্ম। নামজাদা রেস্তোরাঁর প্রধান রাঁধুনি তিনি । ঘরের দরজায় ঢুকতেই মা কালী, রামকৃষ্ণ দেব, মা সারদার ছবি লাগানো। পাশে জ্বলছে ধূপকাঠি। যখনই বাড়িতে ঢোকেন, ছবিতে প্রণাম করে ধূপকাঠি জ্বালিয়ে দেন। 

চীন-ভারত সংঘর্ষের পরে বারবার মা কালীর কাছে প্রার্থনা করছিলেন যত দ্রুত সম্ভব শান্তি ফিরে আসুক। শহীদ ভারতীয় সেনাদের জন্যও দুঃখ মাইকেলের। তাঁর একটাই কথা, এসব যুদ্ধ বড় বড় লোকেদের ব্যাপার। আমরা সাধারণ মানুষ এসবের  কি বা বুঝি? তবে যে সমস্ত সৈন্য মারা গেল তাঁদের মায়ের বুক খালি হল। এটাই সব থেকে কষ্টের। মা কালীর কাছে সবসময় প্রার্থনা করছি যাতে সবকিছু ঠিক হয়ে যায়।

৬৮ বছর বয়সী টনি লিং। চায়না টাউনের একটি রেস্টুরেন্টের মালিক। চায়নাটাউনে যে চাইনিজ কালী মন্দির রয়েছে , সেখানে প্রতিদিন তিনি প্রার্থনা করছেন, যাতে ভারত-চীন সংঘর্ষ মুছে গিয়ে প্রত্যেকে যেন সুখে শান্তিতে দিন কাটাতে পারে। কোনও মায়ের বুক খালি না হয়। তিনিও বললেন, ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#China Town, #we want peace, #india china standoff

আরো দেখুন