‘চিনা সেনা কখনই ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেনি’! মোদীর দাবিতে প্রশ্ন উঠল দেশজুড়ে
লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। লাদাখের প্রকৃত অবস্থা দেশবাসীকে জানানোর দাবি তুলেছেন সনিয়া গান্ধীরা। এই পরিস্থিতিতে প্রথমে সর্বদলীয় বৈঠকে ও পরে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করলেন, ‘কেউ আমাদের সীমায় ঢোকেনি। কেউ আমাদের সীমায় নেই। আমাদের ভূমি কেউ কখনই দখল করতে পারেনি।’
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘আমরা সবাই দেশের সুরক্ষায় রয়েছি। সেনার উপরে দেশের বিশ্বাস অটুট। সর্বদলীয় বৈঠক থেকে শহিদ পরিবারদেরও বলছি, গোটা দেশ তাঁদের পাশে আছে। লাদাখে যা হয়েছে, তা নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী বলেছেন।’ এরপরই তিনি দাবি করেন, ‘কেউ আমাদের সীমায় ঢোকেনি। কেউ আমাদের সীমায় নেই। কোনও সেনা চৌকিও দখল হয়নি। লাদাখে আমাদের ২০ জওয়ান শহিদ হয়েছেন। কিন্তু ভারত মাতার দিকে যারা চোখ তুলে দেখেছে, তাঁদের শিক্ষা দিয়েছেন সেনা জওয়ানরা।’
মোদী বলেন, ‘এখন দেশ সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। কেউ ভারত মাতার দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারে না। সেনা সবসময়, সব জায়গায় সচেষ্ট রয়েছে। সেনার হাতে সমস্ত অস্ত্র রয়েছে। দেশ তাঁদের উপর ভরসা রাখে, আর জওয়ানরাও সেই ভরসার সম্পূর্ণ মর্যাদা রেখে চলে।’
সমস্ত বিরোধী দলের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন, সেনা সবসময় দেশ আগলে রেখেছে। কূটনৈতিক স্তরেও আলোচনা চলছে। ৫ বছরে সীমান্ত এলাকায় যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে।’
তবে, চিনা সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢোকেনি বলে প্রধানমন্ত্রীর দাবির পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, চিনা সেনা যদি ভারতীয় ভূখণ্ডে না ঢুকে থাকে, তাহলে সংঘাত বাঁধল কেন? কেনই বা প্রাণ খোয়াতে হল ২০ জন জওয়ানকে? তাহলে চিনের সৈন্যরা কোথায় এবং কেন আক্রমণ করে বসল ভারতীয় সেনার উপর?
উল্লেখ্য, সরকারের বিরুদ্ধে এদিন সর্বদলীয় বৈঠকে কিছুটা হলেও সুর চড়িয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তিনি বলেন, ‘৫ মে লাদাখে চিন যখন প্রথম অনুপ্রবেশ করে, তখনই এই বৈঠক ডাকা উচিৎ ছিল। কিন্তু তখন তা ডাকা হয়নি।’ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কবে থেকে চিনা অনুপ্রবেশ করল, তা নিয়ে কি সরকারের কাছে তথ্য ছিল? গত সোমবারের এই ঘটনা কি ইন্টেলিজেন্স ব্যর্থতা? সরকারকে কি আগাম সতর্ক করা হয়নি? কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এক্ষেত্রে কি আগাম সতর্ক করতে ব্যর্থ?’ তিনি বলেন, ‘কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা করে কী লাভ হল, যার জন্যে প্রাণ দিতে হল ২০ জন জওয়ানকে?’ মোদীর দাবির পর সনিয়ার অভিযোগ আরও বল পেল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।