← বিবিধ বিভাগে ফিরে যান
সুভাষ ঘিসিং – গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের পথিকৃৎ
দার্জিলিংয়ের গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের নেতা সুভাষ ঘিসিং মারা যান ২১০৫ সালের ২৯শে জানুয়ারি। ৭৯ বছর বয়সে দিল্লীর গঙ্গারাম হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। গোর্খা অধ্যুষিত দার্জিলিংয়ে আলাদা রাজ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সুভাষ ঘিসিং ১৯৮০ সালে গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (জিএনএলএফ) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত গোর্খাল্যান্ডের দাবী ছিল সহিংস। ১৯৮৮ সালে গোর্খা পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠনের মাধ্যমে সহিংসতা বন্ধ হয়।
ঘিসিং ১৯৮৮ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৮ সালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার গঠনের পর পাহাড় ছাড়তে হয় তাঁকে। নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাসে মারা যাওয়ার পর তাঁর মরদেহ নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি পাহাড়ে। আজ এই নেতার জন্মবার্ষিকী।
দেখা যাক এই নেতার জীবনের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনাঃ
- ১৯৩৬ সালের ২২ জুন মিরিকের মঞ্জু টি এস্টেটে জন্ম নেন। পরিবারের ষষ্ঠ সন্তান ছিলেন তিনি
- ১৯৫৪ সালে নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় বাবা মারা গেলে পড়া ছেড়ে সেনায় যোগ দেন।
- ১৯৫৯ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। কিন্তু একইসঙ্গে তাঁকে নেপালি হওয়ার কারণে সেনাবাহিনী ছাড়তে হয়।
- নেপালিদের এই আইডেন্টিটি ক্রাইসিস নিয়ে ১৯৬০ সালে সেনা ছেড়ে দার্জিলিং ফিরে আসেন।
- ১৯৬১ সালে তিনধারে বাংলা প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। একবছর পর চাকরি ছেড়ে কালিম্পং এসে ১৯৬২ সালে জুনিওর বিটি কলেজ থেকে কারিগরি ডিপ্লোমা অর্জন করতে যান। সেখানে অধ্যক্ষের সঙ্গে গণ্ডগোলের জেরে পড়া মাঝপথে ছাড়তে হয়। এরপর সেখানেই স্নাতকস্তরে ভর্তি হন।
- ১৯৬৩ সালে দার্জিলিং সরকারি কলেজে ভর্তি হয়ে দ্বাদশ শ্রেণী সম্পূর্ণ করেন। রাজনীতিতে আকর্ষিত হয়ে এখানে তিনি যোগ দেন ও তরুণ সঙ্ঘ নামক স্থানীয় এক সংগঠনের হয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর ফলে দ্বিতীয় বর্ষে তিনি পাহাড়ের বাসিন্দাদের আর্থসামাজিক দাবীতে প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়ে গ্রেপ্তার হন ও কলেজ ছাড়তে বাধ্য হন।
- তিনি এরপর ১৯৬৮ সালে প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন তৈরী করেন, নিলো ঝাণ্ডা। প্রথম দশ বছর রাজনীতিতে দাঁত ফোটাতে পারেনি তার এই সংগঠন। যদিও ১৯৭০ থেকে গ্রামে গ্রামে গিয়ে তিনি তাঁর সংগঠনের বার্তা ছড়িয়ে দিতে থাকেন।
- এরপর তিনি প্রান্ত পরিষদে যোগ দেন। এরপর ১৯৭৯ সালে ২২ এপ্রিল নেপালি ভাষীদের জন্য তিনি প্রথম পৃথক ভূমির দাবী জানান। এই দাবীকে মোরারজী দেসাই শুধু খারিজ করেনি তাই নয়, চরম অপমান করে। এরপর থেকেই তাঁর নেতৃত্বে গোর্খাল্যান্ডের দাবীতে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম।
- ১৯৮০ সালে তিনি গঠন করেন গোর্খা ন্যাশানাল লিবারেশন ফ্রন্ট