করোনার থাবায় এবার বন্ধ মহিষাদল রথ যাত্রা
পুরীর পর এবার মহিষাদল রাজবাড়ি। এবছর করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ রাখা হচ্ছে রথ উৎসব। ২৪৩ বছরের উৎসবে এই দ্বিতীয়বার জগন্নাথের রথ টানা হচ্ছে না। ৮৮ বছর আগে একবার রথের চাকা বন্ধ রাখা হয়।
বিশ্ব জুড়ে করোনা পরিস্থিতি। করোনার হাত থেকে বাঁচতে এখন নানা বিধিনিষেধ। মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব। এই পরিস্থিতিতে এবার মহিষাদল রাজ পরিবারের ঐতিহ্যবাহী রথ উৎসবও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৪৩ বছর ধরে এই রথকে ঘিরে মহিষাদলের মানুষ উৎসবে মাততেন। রাজপরিবারের কূলদেবতা গোপালজিউ। তার সঙ্গে জগন্নাথকে নিয়ে রথ বের করা হয়। নানা রাস্তা ঘুরে রথ পৌঁছয় গুণ্ডিচাবাড়ি। সেখানেই মাসির বাড়িতে গোপালজিউ আর জগন্নাথের সাত দিন বাস। এই সাতদিন ধরে চলে নানা পুজো পাঠ। এবার নিয়ম মেনে এই পুজোপাঠ হলেও, বন্ধ থাকবে রথ যাত্রা ও উৎসব।
এর আগে শুধু একবার রথের উৎসব বন্ধ রাখা হয়। ১৯৩২। দেশ জুড়ে তখন স্বাধীনতার লড়াইয়ের আগুন জ্বলছে। গোয়ালপাড়ায় বিলিতি দ্রব্যের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অভিযান ৷ বিক্ষোভ দেখানোয় গ্রেফতার করা হয় শচীন্দ্রনাথ পাঁজাকে ৷ জিপের পিছনে বেঁধে নির্মমভাবে ঘষটে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় শচীন্দ্রনাথ পাঁজাকে ৷ মাটির রাস্তার উপর দিয়ে জিপ চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৷ এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে রথের দিনে কংগ্রেসকর্মীরা সোচ্চার হন ৷ আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানায় পুণ্যার্থীরা ৷ প্রতিবাদে শুধুমাত্র ঐতিহ্য বজায় রেখে একবার রথ টেনে উৎসব বন্ধ রাখা হয় ৷
সেবার রথের চাকা নিয়মরক্ষার জন্য গড়ালেও এবার আর তা সম্ভব নয়। বাস্তবটা সকলে বুঝতে পারলেও মন খারাপটা এড়াতে পারছেন না মহিষাদলের বাসিন্দারা। ৮৮ বছর পর আবার রথের চাকা বন্ধ। এখন মহিষাদলের মানুষের একটাই প্রার্থনা। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক পৃথিবী। আগামী বছর আবার রঙিন হয়ে উঠুক রথের উৎসব।