উত্তরবঙ্গে করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি
করোনায় নিয়মিত মৃত্যু হলেও রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিদিনের বুলেটিনে সব মৃত্যুর উল্লেখ না থাকায় বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। দার্জিলিং জেলার ক্ষেত্রেও এখনও তিনজনের মৃত্যুর হিসাব শনিবার পর্যন্ত রাজ্য সরকারের বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়নি। ফলে স্বাস্থ্য দপ্তর মৃত্যুর ঘটনা কিছুটা চেপে য়াচ্ছে কিনা সেই প্রশ্নও উঠেছে। উত্তরবঙ্গের করোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) ডাঃ সুশান্ত রায় বলেন, মৃত্যু চাপা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। প্রত্যেকটি জেলা থেকে প্রত্যেক দিন প্রচুর তথ্য যায়। সেগুলি নথিভুক্ত করে বুলেটিনে অন্তর্ভুক্ত করতে সময় লেগে যায়। করোনায় মৃত্যু হলে নিশ্চয়ই তা সরকারিভাবে দেওয়া হবে।
শিলিগুড়িতে করোনায় সংক্রামিত হয়ে প্রথম এক রেলকর্মীর মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়মিত বাড়ছে। শিলিগুড়িতে এখনও পর্যন্ত করোনায় সংক্রামিত হযে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সরকারি হিসাবে বুলেটিনে শনিবার পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু দেখানো হয়েছে। বাকি মৃত্যুর তথ্য কেন বুলেটিনে দেওয়া হল না, তা নিযে প্রশ্ন উঠছে। গত ১৭ জুন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের চার্চ রোডের বাসিন্দা বিজেন্দ্র গুপ্তা (৭২) করোনায় সংক্রামিত হযে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মারা যান। ওই দিন ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের মাল্লাগুড়ির বাসিন্দা রাজকুমার শ্রেষ্ঠাও (৫৫) কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন। পরদিন, ১৮ জুন, মাটিগাড়ার কদমতলার বাসিন্দা জয়ন্তী সাহার (৪৮) করোনায় সংক্রামিত হযে মৃত্যু হয়। শুক্রবার শিলিগুড়ির একজন এবং জলপাইগুড়ির একজন করোনায় সংক্রামিত হযে মারা যান। শনিবারের বুলেটিনে দার্জিলিং জেলায় পাঁচজনের মৃত্যুর তথ্য বুলেটিনে এলেও জলপাইগুড়ি জেলায় এখনও কোনও মৃত্যু নেই বলে জানানো হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শিলিগুড়িতে একজনের মৃত্যু দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ শুক্রবার শিলিগুড়ি পুরনিগমের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আশ্রমপাড়ার যে ব্যক্তি করোনায় সংক্রামিত হয়ে মারা গিয়েছেন সেই তথ্যই বুলেটিনে এসেছে বলে স্বাস্থ্য দপ্তরের একাংশ মনে করছে।
বাকি তিনটি মৃত্যুর উল্লেখ এখনও না থাকায় বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই বলছেন, করোনায় সংক্রামিত হযে মৃতদের কেউ কেউ কোমরবিডিটিতে মারা যাচ্ছেন বলে বলা হচ্ছে। কিন্তু এখন তো সরকারি বুলেটিনে কোভিড পজিটিভ মৃত্যু এবং কোমরবিডিটি মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাজেই কোমরবিডিটিতে মৃত্যু হলেও সেটা তো ওই তালিকায় থাকার কথা। শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের কার্যনির্বাহী সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার বলেন, সত্যিই যদি মৃতু্য়র ঘটনা চাপা দেওয়া হয় তাহলে সেটা ভয়ংকর ব্যাপার। কারণ পরিসংখ্যান যত প্রকাশ্যে নিযে আসা যাবে ততই মানুষ সচেতন হবেন। এই ভাইরাসের ক্ষতিকারক দিকগুলি জেনে মানুষ যদি সচেতন হন, সাবধান হন তাহলে এই পরিস্থিতিতে সেটা অবশ্যই কাম্য। বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের। দার্জিলিংয়ের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ প্রলয় আচার্য বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।