করোনার জের, বন্ধ হয়ে গেল শিলিগুড়ির একাধিক মার্কেট
করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় একে একে বন্ধ হচ্ছে শিলিগুড়ির বড় বাজারগুলি। সোমবার বন্ধ হয়ে গেল হংকং মার্কেট, বিধান মার্কেটের এন আর সেক্টর এবং নিউ সিনেমা রোডের দু’পাশের সমস্ত দোকান। শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা ঠিক করতে রাতে বৈঠকে বসবেন ব্যবসায়ীরা। সংখ্যাগরিষ্ঠ ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রাখার পক্ষে মত দিলে আজ, মঙ্গলবার থেকে বিধান মার্কেটও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এমনিতেই পাহাড়, সিকিম ও ডুয়ার্সের ক্রেতাদের ভিড় কমে যাওয়ায় লকডাউনের পর বিধান মার্কেটে বেচাকেনা একদম কমে গিয়েছে। বহু দোকান মালিককে সারাদিন বসে থাকার পরেও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। তার মধ্যে করোনা সংক্রমণ হলে যে দুর্ভোগে পড়তে হবে তা অনুমান করেই অনেকে দোকান বন্ধ করার পক্ষে মত দিয়েছেন। এমনিতেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশে শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিধান মার্কেট সবজি বাজার কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ বার বাকি দোকানগুলি বন্ধ হয়ে গেলে গোটা শহরেই ব্যবসা বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। কিন্তু প্রায় দু’মাস টানা লকডাউনের পরেও শিলিগুড়িতে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। রবিবার শিলিগুড়িতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩১। তার আগের দিন ছিল ২২ জন। শুক্রবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪। কী ভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে সেটা স্পষ্ট নয় খোদ স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের কাছেই। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেলে আতঙ্ক আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। ফেডারেশন অব চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্থ বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘দোকানপাট বন্ধ করে দিলে কি করোনার সংক্রমণ রোধ করা যাবে? সরকারি নির্দেশেই কিছু দোকানপাট খোলা হয়েছিল। নিয়ন্ত্রিত বাজার ছাড়া অন্য কোনও বাজার বন্ধ রাখার ব্যাপারে রাজ্য সরকার এখনও কোনও নির্দেশ দেয়নি। আমি সবাইকে সরকারি নির্দেশ মানারই পরামর্শ দেব।’
দোকানপাট খোলার পরে এ পর্যন্ত বিধান মার্কেটে ৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। একের পর মানুষ সংক্রমিত হয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীদের একাংশের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। হংকং মার্কেটের সম্পাদক নিতাই সাহা বলেন, ‘সংক্রমণ বেড়ে চলায় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এই অবস্থায় দোকান খুলে রাখাটা বিপজ্জনক হতে পারে। ৩০ জুনের পর আমরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ফের সিদ্ধান্ত নেব।’ শিলিগুড়ি বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাপি পাল বলেন, ‘৯৫ শতাংশ ব্যবসায়ী চাইছেন কিছুদিনের জন্য বিধান মার্কেট বন্ধ রাখা হোক। সংখ্যাগরিষ্ঠের কথা কী করে উড়িয়ে দেব?’ এদিন বিকেলে পুরসভা এবং দমকল বিভাগ থেকে বিধান মার্কেট স্যানিটাইজড করা হয়।