আজ বৈঠকে রাশিয়া-ইন্দো-চিন, উঠতে পারে গলওয়ান প্রসঙ্গ
ইন্দো-চিন কূটনৈতিক দ্বন্দ্বে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে রাশিয়ার ভূমিকা। বর্তমান প্রেক্ষাপট অন্তত তেমনই। পূর্ব লাদাখ সীমান্তে পুরোদস্তুর শান্তি ফেরার আগেই আজ, মঙ্গলবার রাশিয়া-ইন্দো-চিন বিদেশমন্ত্রীরা বসতে চলেছেন ভিডিয়ো কনফারেন্সে। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং উই মুখোমুখি হওয়ায় অবধারিত ভাবে উঠে আসবে গলওয়ানের সংঘর্ষ প্রসঙ্গ। সে ব্যাপারে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ কী অবস্থান নেন, সেটাই দেখার। এ দিকে, ২৪ জুন, বুধবারের ভিকট্রি ডে প্যারেডে যোগ দিতে রাশিয়া রওনা হয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং।
এর আগে ৯ মে, মস্কোয় ভিকট্রি ডে প্যারেড হওয়ার কথা ছিল, তাতে আমন্ত্রিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে সেই অনুষ্ঠান পিছোনো হয়। বুধবার চিনের তরফেও যোগ দেবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কোনও প্রতিনিধি। রাজনাথ রবিবার বৈঠকে জানিয়েছেন, রাশিয়া সফরে লাদাখ সংঘর্ষের কথা উত্থাপন করবেন তিনি। ফলে, এক্ষেত্রেও রাশিয়ার একটা ভূমিকা থাকছে।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভালো। আবার, আমেরিকার সঙ্গে চিনের তিক্ত সম্পর্ক রাশিয়া ও চিনকে কাছাকাছি এনেছে। গলওয়ানের সংঘর্ষের পর রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত যেমন ভারতের বিদেশসচিবের থেকে পরিস্থিতি জানতে চেয়েছেন, তেমনই আবার রাশিয়া দু’পক্ষের শান্তি রক্ষার বার্তাও দিয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, গলওয়ানের ঘটনার পর ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে আপত্তি করেছিল ভারত৷ শেষে রাশিয়ার হস্তক্ষেপে জট কাটে।
ত্রিপাক্ষিক এই বৈঠকে ভারতের অবস্থান ঠিক কী হবে, তা স্থির করার দায়িত্বে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও চিফ অফ ডিফেন্সে স্টাফ বিপিন রাওয়াত৷ এর আগে ২০১৭ সালে ৭২ দিন ধরে ডোকলাম ‘স্ট্যান্ড অফ’ চলাকালীন এই ত্রয়ীর হাতেই ছিলো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার দায়িত্ব৷ ডোকলামে দু’দেশের সেনার মুখোমুখি অবস্থান যখন ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে, তখন লাগাতার দৌত্য চালিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আস্থাভাজন এই ত্রয়ী৷ সেই সময়ের বিদেশসচিব জয়শঙ্কর ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর বিদেশমন্ত্রীর দায়িত্ব পান৷ তৎকালীন সেনাপ্রধান রাওয়াত দেশের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের দায়িত্বভার পান৷ আর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে দেওয়া হয় ক্যাবিনেট মন্ত্রীর মর্যাদা৷
প্রসঙ্গত, গলওয়ানের সেনা সংঘর্ষের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই দাবি করেছেন, ভারতীয় ভূখণ্ডে কোনও অনুপ্রবেশ হয়নি। মোদীর এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই গলওয়ানকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করেছে চিন৷ এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক মহলে ভারত কী ব্যাখ্যা দেয়, নজর সেদিকেই।