রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বেসরকারি বাস কমানোর জের, বাড়ছে সরকারি বাসে ভর্তুকি

June 23, 2020 | 2 min read

স্কুল-কলেজ বন্ধ তো কী, আনলক-১ শুরুর সঙ্গেই চালু হয়ে গিয়েছে সরকারি, বেসরকারি সব অফিস। কিন্তু ট্রেন-মেট্রো বন্ধ। এ দিকে ডিজেলের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। যানবাহন স্বাভাবিক রাখতে বেসরকারি বাস চালানোর জন্য মালিকদের কাছে সরকারি তরফে অনুরোধ করা হলেও বিশেষ লাভ হয়নি। মালিকরা ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে অনড়। এ অবস্থায় ভাড়া না বাড়িয়ে জনপরিবহণ যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখতে পুরো দায়িত্ব নিতে হচ্ছে সরকারকেই। আর তা করতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমকে প্রতিদিন গড়ে ১৯ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত ভর্তুকি গুনতে হচ্ছে। ভাড়া-বৃদ্ধির দাবি না মানা হলে বেসরকারি বাস পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার লক্ষণ কম। ফলে সরকারি বাস চালিয়ে ভর্তুকির অঙ্ক আরও বাড়ারই আশঙ্কা।

সোমবারই যেমন সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে শহরের উত্তর ও দক্ষিণে ৭৮/১, ২২২, ২৩০, ৭৫, ১২সি, ১৩এ রুটে যৎসামান্য বেসরকারি বাস চলে। রুটের মোট বাসের বড়জোর ১০ শতাংশ। পরিবহণ দপ্তরের হিসেব বলছে, শহরে এ দিন মাত্র ৭০০ বেসরকারি বাস পথে নেমেছিল। যেখানে গত সোমবারও প্রায় তিন হাজার বেসরকারি বাস চলেছিল। যাত্রীদের দুর্ভোগ সামাল দিতে হয়েছে সরকারি বাসকেই। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম ১১৫০টি বাস চালায়। এসবিএসটিসি ও বেসরকারি চার্টার্ডের চারশো বাসও পথে নামে। তবে তা চাহিদার তুলনায় কমই। এ দিকে ডিজেলের প্রতি লিটারের দাম সোমবার দাঁড়িয়েছে ৭৪ টাকা ১২ পয়সা। গত ৭ জুনও যা ছিল ৬৬ টাকা ৭১পয়সা ।

দেখা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম জুনের প্রথম পনেরো দিন বাস চালিয়ে মাত্র ২ কোটি ৮২ লক্ষ ১৩ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি করতে পেরেছে। যা জ্বালানি খরচ বাবদ ব্যয়ের থেকে বেশ কম। অথচ গত জানুয়ারির প্রথম পনেরো দিনে বাস চালিয়ে টিকিট বিক্রির টাকা থেকে ডিজেলের খরচ মিটিয়েও ৬৭ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা আয় করতে পেরেছিল নিগম। পরিবহণ দপ্তর সূত্রে খবর, জানুয়ারিতে নিগম বৃহত্তর কলকাতা ও কয়েকটি দূরপাল্লার রুটে দিনে এক হাজার থেকে বারোশো বাস চালিয়েছে। আনলক-১ পর্বেও প্রায় সমসংখ্যক বাসই পথে নামছে।

এ দিকে কোভিড বিধি মেনে বেশি যাত্রী নেওয়া যাচ্ছে না। আবার ট্রেন না চলায় বাসের বেশিরভাগ যাত্রীই স্থানীয়। অফিসের সময়টুকু ছাড়া খুব প্রয়োজন না হলে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে কেউ তেমন যাতায়াতও করছেন না। তাই দুপুরে বেশির ভাগ বাসই ফাঁকা যাচ্ছে। টিকিট বিক্রি তলানিতে ঠেকছে। অথচ জ্বালানির খরচ বাড়ছে। এস-৭ রুটে বাস চালিয়ে নিগম জানুয়ারি মাসে দিনে ৬৬ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি করেছে। এখন ৩৪ হাজার টাকার টিকিটও বিক্রি হচ্ছে না। এস-৫, এস-২৪ রুটেও টিকিট বিক্রিতে আগে যা আয় ছিল, তার অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। অথচ তেলের খরচ বেড়েছে। ট্রিপও কমানো যায়নি।

বেসরকারি বাসের হিসেব বলছে, এই মুহূর্তে তাদের গড়ে দৈনিক লোকসান ৮০০ টাকা। এখন টিকিট বিক্রি করে একটি বেসরকারি বাসে দিনপ্রতি আয় ২৫০০-২৬০০ টাকা। চালক ও কন্ডাক্টরকে কমিশন বাবদ মজুরি দিতে হয় ৭৫০-৮০০ টাকা। ডিজেলেই বেরিয়ে যাচ্ছে আড়াই হাজার টাকা। টায়ার ভাড়া, বিমা, মোটর ভেহিকেলস কর ও অন্যান্য খরচও আছে। ফলে লোকসান অনিবার্য। যা বহন করতে না চেয়েই বেসরকারি মালিকরা বাস পথে নামাচ্ছেন না। আর সরকারের বেরিয়ে যাচ্ছে মোটা টাকা ভর্তুকি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Bus fare price, #lock down

আরো দেখুন