১জুলাই থেকে শুরু পাহাড় ভ্রমণ
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে সংঘটিত দাঙ্গার ঘটনায় পুলিশ যে চার্জশিট পেশ করেছে তাতে ‘হেইট স্পিচ’ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের নাম উল্লেখই করা হয়নি। বরং দিল্লি পুলিশের অভিযোগপত্রে ওই দাঙ্গার জন্য প্রধানত দায়ী করা হয়েছে সেই সব প্রতিবাদকারীদের, যারা শহরের নানা প্রান্তে তখন দেশের নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন।
তার ঠিক আগে শহরে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তুমুল প্রতিবাদ চলছিল – এবং পাশাপাশি বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরাও প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে নানা উসকানিমুলক বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছিলেন। দিল্লি বিজেপির বিতর্কিত নেতা কপিল মিশ্রা ২৩ ফেব্রুয়ারি শহরের মৌজপুর চকে পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েই হুমকি দিয়েছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতে থাকা অবধি তারা চুপ থাকবেন – কিন্ত তারপরও বিক্ষোভকারীরা রাস্তা খালি না করে দিলে তারা জোর করে তাদের তুলে দেবেন, পুলিশের কথাও শুনবেন না।
হোটেল মালিক থেকে শুরু করে গাড়ি সবই কার্যত বন্ধ। মাকে জিটিএ’র তরফে হোটেল খোলার একটা চেষ্টা হলেও স্থানীয় কিন্তু বাসিন্দার আপত্তিতে সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের নানা প্রান্ত থেকেই পর্যটকেরা জিটিএ কতার্দের ফোন দার্জিলিংয়ে পর্যটকদের যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য আর্জি জানাতে শুরু করেছেন। এই পরিস্থিতিতে পয়লা জুলাই থেকে পর্যটকদের পাহাড়ে ওঠার অনুমতি দিতে চলেছে
জিটিএ। জিটিএ’র তরফে সুরজ শর্মা বলেন, পর্যটকেরা সমানে ফোন করছেন পাহাড়ে বেড়াতে আসার অনুমতি চেয়ে। আমাদের কোনও আপত্তি নেই। হোটেল মালিকদের বঙ্গে বৈঠক করে পর্যটকদের জন্য হোটেল ছাড়া আর কী কী খোলা দরকার সেই ব্যাপারে পরিকল্পনা হয়েছে। এ বার মনে হয় সমস্যা হবে না। তবে সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে পর্যটকদের আমরা ব্যক্তিগত গাড়িতে পাহাড়ে আসার ব্যাপারে উৎসাহ দিচ্ছি।”
জুন মাস থেকে ডুয়ার্স পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের আরও কয়েকটি জেলাতেও পর্যটকদের বেড়ানোর অনুমতি মিলেছে। কিন্তু দার্জিলিং নিয়ে দেশের মানুষের আবেগ কে না জানে! সেই পাহাড় বন্ধ থাকার প্রভাব পড়েছে শিলিগুড়িতেও। দোকান, বাজারে পর্যটকদের আনাগোনার সেই পরিচিত দৃশ্য উধাও। জিটিএ’র এই নয়া সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন আ্যাসোসিয়েশন অব কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যরিজমের আহ্বায়ক রাজ বসু। তিনি বলেন, “জিটিএ এটা কার্যকর করতে পারলে কেবল পাহাড়ে অর্থনীতিই বাঁচবে না, পর্যটকেরাও উপকৃত হবেন।’ তাঁর যুক্তি, টানা ঘরবন্দি মানুষ এখন হাঁফিয়ে উঠেছেন। সকলেই কাছে পিঠে একটু খোলা হাওয়ায় শ্বাস নিতে চাইছেন। বাগডোগরা বিমানবন্দরেও তার প্রভাব গত এক সপ্তাহ ধরে দেখা যাচ্ছে। এখন বিমানে যত শোক বাগডোগরা থেকে দেশের নানা প্রান্তে যাচ্ছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি লোক এখানে নামছেন। বেশির ভাগই পর্যটক। তাঁদের গন্তব্য ডুয়ার্সে। রাজ বসু এত সহজে যে মুক্তি পাব না সেটা গোটা বিশ্ব বুঝে গিয়েছে। করোনার সঙ্গে লড়াই করেই আমাদের পর্যটনকে বাঁচাতে হবে। সেভাবেই আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে যাতে মানুষ একটু বেড়ানোর সুযোগ পান।’ রাজের দ্বিতীয় যুক্তি, এখনই পাহাড়ে পর্যটন ব্যবসা শুরু করা না-গেলে পুজোর মরসুম পুরো মার খাবে। সেটা পাহাড়ের অর্থনীতিকে একেবারে শুইয়ে দিতে পারে। দার্জিলিং হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় খান্না বলেন, ‘হোটেল তো আমরা খুলেই রেখেছি। কিন্তু সাইট সিয়িংয়ের ব্যবস্থা না-থাকলে একজন পর্যটক দার্জিলিংয়ে বেড়াতে এসে কী করবেন? সেটাই জিটিএ কর্তাদের বলা হয়েছে।টাইগার, রোপওয়ে, চিড়িয়াখানা, টয় ট্রেন চালু করা গেলে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রত্তত ৷