ইন্দিরার আমলে ‘নিষিদ্ধ’ করা হয়েছিল এই অমর শিল্পীর গান
চিরকালই স্বাধীনচেতা ছিলেন কিশোর কুমার। গানটা তিনি ভালবেসে গাইতেন। সেখানে কারও কোনও চোখ রাঙানি তিনি সইতেন না। সে কোনও অনুষ্ঠান উদ্যোক্তা হোন বা দেশের প্রধানমন্ত্রী। শোনা যায়, ইন্দিরা গান্ধিকে পর্যন্ত ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সেই ‘রাগ’-এ ইন্দিরা ‘নিষিদ্ধ’ করেছিলেন এই অমর শিল্পীর গান।
সময়টা ১৯৭৬ সাল। কংগ্রেস তখন দিল্লির মসনদে। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি। দেশজুড়ে চলছে ‘এমার্জেন্সি’। কংগ্রেস চেয়েছিল তাদের সরকারি প্রকল্পের প্রচারে এমন এক কন্ঠ, যা সহজেই ছুঁয়ে যাবে সাধারণ মানুষের মন। সেখান থেকেই মাথায় আসে সঞ্জয় গান্ধির খুব ভাল বন্ধু কিশোর কুমারের নাম।
সে সময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ছিলেন বিদ্যাচরণ শুক্লা। তিনিই কিশোর কুমারের কাছে বার্তা পাঠান, ইন্দিরা গান্ধির সরকারের জন্য গান গাওয়ার। কিন্তু মুখের উপর না করে দেন কিশোর কুমার। শোনা যায়, যিনি এই বার্তা নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর কাছে ‘কিশোরদা’ জানতে চেয়েছিলেন এই গান তাঁর কেন গাওয়া উচিত। উত্তরে বার্তাবাহক বলেছিলেন, ‘ভি সি শুক্লা আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন তাই।’ ‘নির্দেশ’ শব্দে ঘোর আপত্তি ছিল এই বাঙালি কৃতীর। এরপরই সটান মুখের উপর না বলে দেন।
এদিকে এই খবর কংগ্রেস নেতৃত্বের কানে পৌঁছতেই কিশোর কুমারের উপর বড় কোপ নেমে আসে। অল ইন্ডিয়া রেডিও ও দূরদর্শনে তাঁর সব গান ‘ব্যান’ করা হয়। ১৯৭৬ সালের ৪ মে থেকে ‘এমার্জেন্সি’র শেষ দিন পর্যন্ত বহাল ছিল এই ‘শাস্তি’। পরে এ প্রসঙ্গে কিশোর কুমার একবার বলেছিলেন, ”আমি জানি না উনি কেন এসেছিলেন। কিন্তু যেটা আমি করতে চাই না আমাকে দিয়ে কেউ জোর করে তা করাতে পারবে না। আমি অন্যের ইচ্ছা বা আদেশে গান গাই না।”