কয়লা খনিতে ১০০ শতাংশ FDI ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর পরিপন্থী, মোদীকে চিঠি মমতার
লকডাউনের জেরে দেশের আর্থিক ঘাটতি মেটাতে একাধিক সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছিল কেন্দ্র। তার মধ্যে অন্যতম ছিল কয়লা খনির বেসরকারিকরণ, সেখানে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (FDI)। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ নিজে তা ঘোষণা করেছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী মোদি (Narendra Modi) নিলামের উদ্বোধনও করেন। এবার কেন্দ্রের এই নীতির বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। চিঠিতে তাঁর বক্তব্য, কয়লা খনির মতো দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ যা অর্থনীতিতে একটা বড় ভূমিকা নেয়, তাকে এভাবে বেসরকারিকরণ করে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ে তোলা যায় না। কারণ, দুটি ভাবনা পরস্পরর বিরোধী। তাতে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে। চিঠিতে তাঁর বিনীত অনুরোধ, সিদ্ধান্ত যেন পুনর্বিবেচনা করে দেখে কেন্দ্র।
কয়লা খনিগুলিকে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে বিতর্ক ছিলই। তে সত্ত্বেও করোনা, লকডাউন আবহে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঠিক এক সপ্তাহ আগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৪১টি কয়লা খনির নিলাম প্রক্রিয়া উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে ওইদিন তিনি একইসঙ্গে এও বলেন যে বিদেশি পণ্যে নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় পণ্য ব্যবহারে জোর দিতে হবে। তাঁর সেই বক্তব্যও ছিল পরস্পরবিরোধী।
এরপরই বেসরকারিকরণ নিয়ে সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, কোল ইন্ডিয়ার মতো বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ কয়লা উৎপাদনকারী সংস্থার বেসরকারিকরণ হওয়া মানে আমজনতা তার সুবিধা আগের মতো উপভোগ করতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, ১৯৭৩ সালে কয়লা খনিকে জাতীয়করণের প্রেক্ষাপট কী ছিল। দেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ সম্ভব নয় বলে মনে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে আরও একটি বিষয়ের বিরোধিতা করেছেন তিনি। কোল ইন্ডিয়ার সদর দপ্তর কলকাতা থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এখন তাঁর আবেদনে কতটা সাড়া পড়ে, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।