কয়লা খনিতে ভয়াবহ ধস, আতঙ্ক আসানসোলে
আবার ভয়াবহ ধসের ঘটনা পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল কয়লাখনি এলাকায়। এই ধসের জেরে একসঙ্গে দুটি ডাম্পার তলিয়ে যায় মাটির তলায়। তবে তড়িঘড়ি উদ্ধার কাজ চালিয়ে কয়েক ঘন্টার মধ্যে ডাম্পারের সঙ্গে মাটিতে চাপা পড়া ডাম্পারের এক চালককে উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে এই ধসের ঘটনাটি ঘটে। শুক্রবার ভোর রাত থেকে উদ্ধার কাজ শুরু হয়। আসানসোলের বারাবনি ব্লকের ইসিএলের সালানপুর এরিয়ার গৌরান্ডি বেগুনিয়া কোলিয়ারির বারুদ ঘরের কাছে বিশাল এলাকা জুড়ে এই ধস নামে। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন একটি ডাম্পারের চালক স্বপন ঘোষ। জখম ঐ চালককে দূর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন ওই চালকের শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল।
ইসিএলের এই ওসিপি বা খোলামুখ খনিতে বৃহস্পতিবার রাতে যখন ধসের ঘটনা ঘটে তখন সেখানে নাইট শিফটে কাজ চলছিল। কয়লা বোঝাই একটি ডাম্পার ও একটি খালি ডাম্পার খনি এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিল। আচমকায় ধস নামলে মুহূর্তের মধ্যে চালক সহ ডাম্পার দুটি তলিয়ে যায়। শব্দ পেয়ে অন্য কর্মীরা ছুটে আসেন। শুক্রবার সকাল থেকেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় ডাম্পারগুলিকে উদ্ধারের কাজ। তলিয়ে যাওয়া ডাম্পার দুটি উদ্ধারের পাশাপাশি ধস ভরাটেরও কাজ শুরু হয়।
সালানপুরের এরিয়া জেনারেল ম্যানেজার অমিতাঞ্জন নন্দী বলেন, এই খনিটি ইসিএলের হলেও বেসরকারি সংস্থা কয়লা উত্তোলনের দায়িত্বে রয়েছে। ডাম্পার দুটি ওই বেসরকারি সংস্থারই ছিল। উদ্ধারের কাজও ওই সংস্থা করছে। তিনি আরও বলেন, যেখানে ধসের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কয়লা উত্তোলন করা হয়নি। কেন ধসের ঘটনা ঘটলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, বারাবনি ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অসিত সিং বলেন, কোম্পানি আমলের সময়কার এই কয়লা খনিটি। পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। তারপরে বিভিন্ন সময়ে বন্ধ এই খনি থেকে বেআইনিভাবে কয়লা উত্তোলন করত কয়লা মাফিয়ারা। বছর দেড়েক আগে নতুন করে ইসিএল খনিটি চালু করেছে। তার আরও অভিযোগ, ডিজিএমএস খনিটি চালুর আগে ঠিকঠাক রিপোর্ট তৈরি করলে এই ধসের ঘটনা হয়তো ঘটত না।
সূত্রের খবর, আগামী ১৪ বছরের জন্য ১৪০ লক্ষ টন কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে এই খনিটি থেকে। ৬৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশাল এই প্রোজেক্টটি তৈরি করেছে ইসিএল। তবে, বৃহস্পতিবার রাতে সেই প্রকল্পে ভয়াবহ ধসের ঘটনায় কপালে ভাঁজ পড়েছে ইসিএলের আধিকারিকদের।
উল্লেখ্য, সপ্তাহ খানেক আগেই ইসিএলের জামবাদ কোলিয়ারি এলাকার পরিত্যক্ত আবাসন এলাকায় ধসের ঘটনা ঘটেছিল। একটি আবাসন সহ শাহনাজ বানু নামে বছর ৪০ এর এক মহিলা সেই ধসে মাটির তলায় তলিয়ে যান। উদ্ধার কাজ চললেও, এখনও তাঁর খোঁজ মেলেনি।