গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জের, পুড়ল বিজেপি জেলা সভাপতির কুশপুতুল
বিধানসভা ভোটের এখনও ঢের দেরি। তাঁর আগেই পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও চরমে উঠল বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল। একই হাতে বিজেপির দলীয় পতাকা ও কলো পতাকা নিয়ে গো ব্যাক স্লোগানে জেলা বিজেপি সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন দলেরই কর্মীরা। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার ঘটনা। বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির এই গোষ্ঠী কোন্দলে উল্লসিত তৃণমূল শিবির।
লোকসভা ভোটের পর থেকেই পূর্ব বর্ধমান জেলা (পূর্ব গ্রামীণ ) সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের বিরুদ্ধে দলেরই একাংশ স্বোচ্চার হতে শুরু করেন। দলের দেওয়া ত্রাণ বিলিতে অনিয়ম সহ দলের অর্থ আত্মসাৎতের অভিযোগ তুলে ইতিপূর্বে একাধিকবার কৃষ্ণ ঘোষের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপি কর্মীরা। এদিন গোষ্ঠী কোন্দল আরও নগ্ন পর্যায়ে পৌঁছায়।
জেলা বিজেপির তরফে এদিন কাটোয়ার পানুহাটে গৃহ সম্পর্ক অভিযান ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। সেই কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন জেলা বিজেপি সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ। ওই সময় এক হাতে পোস্টার, কলো পতাকা এবং বিজেপির দলীয় পতাকা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন বেশকিছু বিজেপি কর্মী সমর্থক। তাঁরা কৃষ্ণ ঘোষকে কালো পতাকা দেখিয়ে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। যা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচি স্থল। সন্ধ্যায় কাটোয়ার পানুহাটেই জেলা বিজেপি সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের কুশপুতুলও দাহ করলো বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা।
কাটোয়ার বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী চঞ্চল মণ্ডল বলেন, গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের লোকজন তাঁদের উপর সন্ত্রাস চালিয়ে ছিল। তৃণমূলের যাঁরা আমাদের মারধর করে, মিথ্যা মামলা করে তাঁরাই এখন কৃষ্ণ ঘোষের কাছের লোক। তাঁদের নিয়েই কৃষ্ণ ঘোষ এখন রাজনীতি করছে। বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের আরও অভিযোগ, দলের দেওয়া ত্রাণ নিয়েও স্বজনপোষণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণ ঘোষ দলের অর্থও আত্মসাৎ করেছেন। চঞ্চল মণ্ডল সহ অপর বিক্ষুব্ধ কর্মীরাদের স্পষ্ট বক্তব্য, দল কৃষ্ণ ঘোষকে বহিস্কার না করা পর্যন্ত তাঁরা এমন বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন।
যদিও জেলা বিজেপি সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দলের কর্মীদের অভিযোগ মানতে চাননি। পাল্টা তিনি দাবি করেন, সবটাই শাসক দলের চক্রান্ত। একই সঙ্গে বলেন, আমি কোন দুর্নীতি করে থাকলে তা ওরা সামনে আনুক। যাঁরা দলের ঝান্ডা নিয়ে দল বিরোধী কাজ করছে তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে। দল তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শুধু পূর্ব বর্ধমান জেলায় নয়, গোটা রাজ্যে এখন বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল চরমে পর্যায়ে। কয়েকদিন ধরেই কাটোয়ার মানুষ বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল দেখে আসছে। এদিনও দেখেছে। লাগাতার নিজেদের দলের কর্মীদের বিক্ষোর মুখে পড়ে মানবাঁচাতে কৃষ্ণ ঘোষ এখন শাসক দলের দিকে আঙুল তুলছেন। রাজনীতিতে এরথেকে বড় লজ্জা ঘটনা আর কিছু হতে পারেনা। ”