রাতভর টানা বৃষ্টির জের, বিপর্যস্ত কোচবিহার
কোথাও জল দাঁড়িয়ে পড়ল রাস্তার উপরে। কোথাও নদী বাঁধে ধস নামল। কোথাও কোথাও আবার গ্রামের ভিতরে জল ঢুকে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়লেন সাধারণ মানুষ।
বুধবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল কোচবিহার। একে, করোনা আবহে লক্ষাধিক মানুষ চলতি মাসেই ভিন্ রাজ্য থেকে জেলায় ফিরেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও অনেকেই লকডাউনে কাজ করতে পারেননি। সবার বড় ভরসার জায়গা ছিল কৃষি। টানা বৃষ্টিতেই সেই আমন ধান চাষেও ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। হাজার হাজার বিঘে জমির বীজতলা জলের নীচে চলে গিয়েছে বলে কৃষকেরা জানান। সেই সঙ্গেই ফুঁসতে শুরু করেছে তোর্সা, তিস্তা, কালজানির মতো নদীও।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বাঁধ সংস্কারের জন্য উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়া গোটা পরিস্থিতির দিকেই নজর রাখা হছে। প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান জানান, কোনও নদীতেই এখন পর্যন্ত কোনও বিপদ সঙ্কেত নেই। ভারী বৃষ্টির জন্য কিছু জায়গায় জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রেখেই ইতিমধ্যে জেলা, মহকুমা এবং ব্লক পর্য়ায়ের সমস্ত আধিকারিক, কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, “বাঁধ সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত থেকে চব্বিশ ঘণ্টায় কোচবিহারে ২৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। মাথাভাঙায় ১৬৬ মিলিমিটার এবং তুফানগঞ্জে ২৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া দিনহটায় ৮৩ মিলিমিটার এবং মেখলিগঞ্জে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ২ লক্ষ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন চাষ হয়। এখন ধানের বীজতলা রোপন শুরু হয়েছে। এই সময় জলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বৃষ্টিপাত এতটাই হয়েছে যে বীজতলা ডুবে গিয়েছে।