চন্দ্রপৃষ্ঠে সফট ল্যান্ডিংয়ের মডেল বানাচ্ছে বাংলার এই বিশ্ববিদ্যালয়
মহাকাশ গবেষণায় দীর্ঘদিনের না হওয়া কাজ শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে মহাকাশ গবেষণায় বেসরকারি সংস্থাকেও প্রবেশের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তারা ইসরোর (ISRO) নেতৃত্বেই মহাকাশ গবেষণা ও পরিকাঠামো উন্নয়নে কাজ করবে। এরপরই ইসরোর সঙ্গে জোট বাঁধল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। আগের চন্দ্রাভিযান ভারতের ব্যর্থ হয়েছে, ল্যান্ডার বিক্রমকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আর এই পরিস্থিতিতে ইসরোর সঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গাঁটছড়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ চন্দ্রপৃষ্ঠ বা অন্যান্য গ্রহে সফট ল্যান্ডিং করার জন্য ল্যান্ডার ও রোভারের মডেল তৈরি করবেন যাদবপুরের গবেষকরা। এর আগে ‘বিক্রমের’ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা থেকেই শিক্ষা নিয়ে এবার তাই আরও আঁটসাঁট বেঁধে নামতে চাইছে ইসরো।
উল্লেখ্য, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর দুই গহ্বরের মাঝে অবতরণ করার কথা ছিল বিক্রম ল্যান্ডারের। যে অবতরণ সফল হলে সোভিয়েত ইউনিয়ন, আমেরিকা, চিনের পর বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের মাটি ছোঁয়ার কৃতিত্ব অর্জন করত ভারত। দক্ষিণ মেরুতে নামত প্রথম দেশ হিসেবে। কিন্তু নামার আগেই হারিয়ে যায় ল্যান্ডার বিক্রম।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক ইসরোর সঙ্গে কাজ করছেন। ভারতের মহাকাশ গবেষণা, বিশেষত চাঁদ বা অন্য গ্রহে মহাকাশযান অবতরণের জন্যে ল্যান্ডারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেই ল্যান্ডার তৈরিতেই ইসরোকে সাহায্য করবেন যাদবপুরের গবেষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের অধ্যাপক ও ইসরোর সঙ্গে যুক্ত কাজের অন্যতম সায়ন চট্টোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘ল্যান্ডারের সুক্ষ্ম ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, অর্থাৎ ল্যান্ডারের সফট ল্যান্ডিংয়ের জন্যে কাজ করছি আমরা।’
যাদবপুরের গবেষকরা যে মডেল তৈরি করবেন, ইসরোর ইঞ্জিনিয়াররা সেটারই বাস্তবায়ন করবেন। ইসরো জানিয়েছে, শুধু চন্দ্রাভিযান নয়, অন্যান্য গ্রহ মহাকাশযান অবতরণের ক্ষেত্রেও এই মডেলের ল্যান্ডারই ব্যবহার করা হবে। ওই কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. অমিতাভ গুপ্তও।
দেশের মহাকাশ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় জুড়তে পারায় নতুন পালক যোগ হল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মুকুটে।