ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তি পাচ্ছে ৭টি ছবি
লকডাউন সত্যি সত্যিই ভারতীয় বিনোদনের খোলনলচে বদল ঘটাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় দেশজুড়ে সিনেমা হল বন্ধ থাকায় প্রত্যেকেই ডিজিটাল মাধ্যমে তাঁদের ছবি রিলিজ করতে চাইছেন। ‘গুলাবো সিতাবো’ বা ‘ঘুমকেতু’র পর এবারে আরও নির্মাতারা ডিজিটাল মাধ্যমের দিকে ঝুঁকছেন। সোমবার ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ডিজনি প্লাস হটস্টার তাদের প্ল্যাটফর্মে বেশকিছু বড় বাজেটের ছবি মুক্তির কথা ঘোষণা করল। জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে সাতটা ছবি এই প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাচ্ছে। আর ছবির নামগুলো শুনলে যে কেউ চমকে যাবেন—‘লক্ষ্মী বম্ব’, ‘ভুজ: দ্য প্রাইড অব ইন্ডিয়া’, ‘সড়ক ২’, ‘দ্য বিগ বুল’, ‘দিল বেচারা’, ‘লুট কেস’ ও ‘খুদা হাফিজ’। অর্থাৎ চলতি বছরের বেশ কয়েকটা বিগ বাজেট ছবি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাচ্ছে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অক্ষয়কুমার, অজয় দেবগণ, আলিয়া ভাট, বরুণ ধাওয়ান ও অভিষেক বচ্চন।
এদিন বরুণ কার্যত সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন। তিনিই একের পর এক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন বাকিদের উদ্দেশে। নিজের ছবির আলোচনা ছাড়াও লকডাউনে কে, কীভাবে সময় কাটিয়েছেন তা নিয়েও মুখ খোলেন অক্ষয়, অজয় বা আলিয়ারা। ‘লক্ষ্মী বম্ব’ হরর কমেডি। তিরিশ বছরের কেরিয়ারে এই প্রথম অক্ষয় অভিনয় করলেন একজন রূপান্তরকামীর চরিত্রে। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তৈরি ‘ভুজ…’ এ অজয়কে দেখা যাবে স্কোয়াড্রন লিডার বিজয় কার্নিকের চরিত্রে। ‘সড়ক ২’ আলিয়ার জীবনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ছবি হতে চলেছে। বলছিলেন, ‘ছোট থেকে স্বপ্ন দেখতাম যে বাবার পরিচালনায় কাজ করব। এবারে সেই সুযোগটা পেয়ে আমি খুবই খুশি।’ ক্রাইম ড্রামা ‘দ্য বিগ বুল’-এ রয়েছেন অভিষেক বচ্চন। এছাড়াও মুক্তি পাচ্ছে কুণাল খেমু অভিনীত ‘লুটকেস’ ও বিদ্যুৎ জামওয়াল অভিনীত ‘খুদা হাফিজ’। এর মধ্যে প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের শেষ ছবি ‘দিল বেচারা’র মুক্তির কথা আগেই জানা গিয়েছিল।
এদিনের আলোচনার একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল বর্তমান পরিস্থিতিতে সিনেমা মুক্তি। সিনেমা হল বনাম ডিজিটাল মাধ্যম কে এগিয়ে বা কোন মাধ্যম ছবি মুক্তির জন্য উপযুক্ত তা নিয়েও উপস্থিত তারকারা মতামত জানালেন। যেমন অক্ষয় মনে করছেন, ‘ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো’র অবশ্যই একটা আলাদা মজা আছে। কিন্তু আমার কাছে মানুষের সুরক্ষা সবথেকে বড় কথা। তার উপর ওটিটির মাধ্যমে এই কঠিন সময়েও অনুরাগীদের মুখে হাসি ফোটানোর সুযোগ পাচ্ছি।’ সাধারণ দর্শক সপ্তাহে হয়তো একটা ছবি হলে গিয়ে দেখেন। এই প্রসঙ্গ টেনেই অজয় দেবগণের বক্তব্য, ‘বছরে ৫২টা সপ্তাহ। সেখানেও হল পাওয়া নিয়ে অনেক সময় অসুবিধা থাকে। তাই সেক্ষেত্রে ওটিটি সেরা মাধ্যম।’ অজয়ের মতে, করোনা পরিস্থিতি কেটে গেলেও ওটিটি ও সিনেমা হল সহাবস্থান করবে। অভিষেক যেমন হলের নির্দিষ্ট সময়ের পরিবর্তে বাড়িতেই পপকর্ন সহযোগে পরিবারের সঙ্গে ছবি দেখার উপর জোর দিলেন। বোঝাই যাচ্ছে, বিকল্প হিসেবে ওটিটি এখন প্রাসঙ্গিক। কিন্তু আগামী দিনে এই লড়াই কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা দেখার জন্য দিন গুনছে বলিউড।