রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

প্রদেশ কংগ্রেস অফিসে বিধান স্মরণে আজ বামেরাও

July 1, 2020 | 2 min read

বিধানচন্দ্র রায়ের জমানায় জঙ্গি আন্দোলন করে রাজ্যে বামপন্থীদের উত্থান। খাদ্য আন্দোলন পুলিশের গুলি এবং মৃত্যু মিছিলের পর ‘খুনি বিধান নিপাত যাক’ হয়ে উঠেছিল বামেদের পরিচিত স্লোগান। আবার বাম জমানায় মহাকরণের অলিন্দে বিধান রায়ের মূর্তি উন্মোচন করেছিলেন জ্যোতি বসু। কমিউনিস্ট পার্টির তাবড় নেতা ইএমএস নামবুদরিপাদ বিধান রায়ের প্রয়াণের পর শোকবার্তায় তাঁকে ‘যোগ্য প্রশাসক’ বলেছিলেন।

কঠোর সমালোচনা থেকে সম্মাননার ইতিহাস থাকলেও বামপন্থীরা কখনও প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরে বিধান রায়ের জন্মদিনে যায়নি। কিন্তু বদলে যাওয়া সময়ের দাবিতে আজ, ১ জুলাই বিধান রায়ের জন্মদিনে প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরের অনুষ্ঠানে বিমান বসুর নেতৃত্বে সেখানে যাবেন বাম নেতারা। কাল, ২ জুলাই আবার ফরোয়ার্ড ব্লকের প্রয়াত নেতা অশোক ঘোষের জন্মদিনে হেমন্ত বসু ভবনের অনুষ্ঠানে সোমেন মিত্রর নেতৃত্বে যাবেন কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ। জোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতার কারণে এই সৌজন্য বিনিময় হলেও বাম-কংগ্রেস নেতারা যে অতীতের তিক্ততা ভুলে এগোতে চাইছেন, প্রকট হচ্ছে সেই বার্তাই।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র যেমন সরাসরি বলছেন, ‘সেকাল এবং একালের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। সেকালে জ্যোতি বসু বিরোধী নেতা, বামেরা বিরোধী দল। গণতন্ত্রে যে বিরোধীদের যোগ্য গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন, সেই মহানুভবতা বিধান রায়ের ছিল। বিধান ভবনের অনুষ্ঠানে বাম নেতৃত্ব আসবেন। কংগ্রেস ও বাম নেতারা যে ঐক্যবদ্ধ, সেই বার্তা সর্বত্র পৌঁছবে।’

২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর অনেক বদল এসেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। এক সময়ে অকল্পনীয় হলেও ২০১৬-য় কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী জোট হয়েছে। যদিও বিধান রায়কে নিয়ে বামেদের কট্টর মনোভাব তার অনেক আগেই বদলে গিয়েছে। নিউ টাউন জ্যোতি বসু নগর না হলেও সল্টলেক বিধাননগর হয়েছে। উল্টোডাঙা স্টেশনের নাম বিধাননগর হলেও বামেরা আপত্তি করেনি। এমন বহু নজির রয়েছে। তবে বিধান রায়ের জন্মদিনে প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরের অনুষ্ঠানে কখনও যায়নি বামেরা। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শমীক লাহিড়ির কথায়, ‘আগে হত না বলে কোনও দিন হবে না, তা তো নয়!’ সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর আর এক সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘বিধানসভায় প্রতি বছর বিধান রায়ের জন্মদিনে আমরা শ্রদ্ধা জানাই। প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরের অনুষ্ঠানে বিমানদা যেতে বললে যাব।’ একই ভাবে সোমেন বলেন, ‘আগে অশোক ঘোষের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমরা যাইনি। এ বার যাচ্ছি। এতে এতে সবস্তরেই একসঙ্গে চলার বার্তা পৌঁছবে।’ আর ফরোয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘ইতিহাসের স্রোত কখনও এক রকম থাকে না। কখনও বাধা তৈরি হয়, কখনও সেই বাধা ভেঙে ইতিহাস এগিয়ে চলে।’

আদর্শগত পার্থক্য থাকলেও বিধান রায় যে জননেতা ছিলেন, সে কথা অস্বীকার করার উপায় নেই বলে জানিয়েছেন সিপিআই রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘কংগ্রেসের সঙ্গে বামপন্থীদের এখন একসঙ্গে লড়াই-সংগ্রাম হচ্ছে। তা ছাড়া বিধান রায় বিশিষ্ট জননেতা ছিলেন। তাঁর জন্মদিনে প্রদেশ কংগ্রেস যখন আমন্ত্রণ করেছে, তখন যেতে তো হবেই। অতীতের সঙ্গে বর্তমানকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#dr bidhan chandra roy, #pradesh congress office

আরো দেখুন