১০ হাজার ডাক্তার, নার্স নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্যসরকার
করোনা-পরবর্তী সময়ে এই প্রথম রাজ্য সরকারি দপ্তরে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যবাসীকে আরও ভালো স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে প্রায় ১০ হাজার চিকিৎসক, নার্স এবং টেকনোলজিস্ট নিয়োগ করতে চলেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। এর মধ্যে সাড়ে ৬ হাজার নার্স এবং আড়াই হাজার চিকিৎসক রয়েছেন। পাশাপাশি, লকডাউনের আগে সরকারি হাসপাতালগুলিতে বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে যে ১ হাজার মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তাও ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে মোট নিয়োগের সংখ্যাটা ১০ হাজার। হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান তাপস মণ্ডল জানিয়েছেন, চলতি বছরের মধ্যেই স্বাস্থ্যদপ্তর এই বিরাট সংখ্যক চিকিৎসাকর্মী নিয়োগ করবে। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে চাইছেন। কারণ করোনা মোকাবিলা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে নার্স ও চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়টি জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই দ্রুততার সঙ্গে এই প্রক্রিয়া শুরু করছি আমরা।’
প্রথমে হবে নার্সদের ইন্টারভিউ। ১৫ জুলাই থেকে তা শুরু হয়ে চলবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। নার্স নিয়োগের জন্য আবেদন এবং তার মূল্যায়ন অবশ্য আগেই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, করোনার জেরে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। নার্সের মোট ১০ হাজার শূন্যপদের জন্য আবেদন জমা পড়েছিল সাড়ে ৮ হাজার। তার মধ্যে সাড়ে ৬ হাজার বাছাই প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেবে হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড। সেটা মিটলে সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হবে ডাক্তার নিয়োগের ইন্টারভিউ। সেখানে দু’টি পদ রয়েছে। এক, মেডিক্যাল অফিসার (স্পেশালিস্ট)। দুই, জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার (জিডিএমও)। করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে ১৫ জুলাই থেকে শুরু হতে চলা ইন্টারভিউয়ে যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানা হবে। বোর্ডের অফিসেই এই ইন্টারভিউ আয়োজনের পরিকাঠামো তৈরি হবে। চলতি সপ্তাহ থেকেই নির্বাচিত প্রার্থীদের কাছে কল লেটার পৌঁছনোর প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।
রিক্রুটমেন্ট বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কলকাতা ও লাগোয়া জেলার প্রার্থীদের ইন্টারভিউতে আগে ডাকা হবে। তারপর উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল এলাকার প্রার্থীদের ডাকা হবে। ঠিক হয়েছে, ইন্টারভিউতে মোট চারটি টেবিল থাকবে। প্রত্যেক টেবিলে ৫০ জন করে চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ হবে। অন্য সময়ে আটটি পর্যন্ত টেবিল থাকে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্বের বিধি মানতে গিয়ে তা কমাতে হচ্ছে। এছাড়া প্রত্যেক চাকরিপ্রার্থীকে মাস্ক, স্যানিটাইজার, হেড শিল্ড পরে ইন্টারভিউতে আসতে হবে। প্রত্যেককে স্যানিটাইজ করে অফিসে ঢোকানো হবে। ইন্টারভিউ শুরুর আগেও প্রার্থীদের বসার জায়গায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করা হবে।
এর নেপথ্যে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর একটাই লক্ষ্য—স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তোলা। আর স্লোগান? করোনা হারবেই।