মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতে স্বাভাবিক হতে পারে কলকাতার বেসরকারি বাসপরিষেবা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাস-মিনিবাস অধিগ্রহণের হুঁশিয়ারির পরই সুর নরম মালিকদের। জট কাটাতে বুধবার পরিবহণ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, আলোচনার মাধ্যমে জট খুলছে। আগামিকাল, বৃহস্পতিবারের মধ্যে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল সংগঠনগুলির কাছে। সেই তথ্য তারা জমা দিতে চলেছে।
বুধবার দুপুরে থেকে ময়দান টেন্টে দু’পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের পর মনে করা হচ্ছে শুক্রবার থেকে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে বাস মালিকেরা ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে এখনও অনড়। তবে বিমা, ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, ঋণ, রুট পারমিট-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আর্থিক ছাড় মিললে সমাধানের পথ বেরিয়ে আসতে পারে। এর পাশাপাশি পুলিশ কেস-এর বিষয়টিও জানানো হবে সংগঠনগুলির তরফে।
অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাস চালাতে গেলে দুই রকমের খরচ হয়। দীর্ঘমেয়াদী এবং দৈনিক। লকডাউনের কারণে বাস বসেছিল। ফলে এই সময় রোজগার হয়নি। ফলে নানা ক্ষেত্রে ছাড়া পাওয়া উচিত।”
জয়েন্ট কাউন্সল অব বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “জট খুলছে। আমারা মুখবন্ধ খামে কিছু তথ্য আগামিকাল পরিবহণ দফতরে জমা দিচ্ছি। তার পর বাস মালিকেরা যদি গাড়ি চালাতে চান, আমাদের কোনও আপত্তি নেই।”
গত সোমবার থেকে রাস্তায় বাস-মিনিবাস উধাও। চরম দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। এ দিনও শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সেই ভোগান্তির ছবি ধরা পড়েছে। এ দিন বিভিন্ন সরকারি অফিস ছুটি থাকায়, গত দু’দিনের মতো অবশ্য বেশি মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়নি। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, “এক-দু’দিনের মধ্যে রাস্তায় বাস না নামালে, তা নিয়ে নেওয়া হবে। প্রয়োজনে চালক দিয়ে বাস চালাবে রাজ্য সরকার।”
যদিও এর আগে ১ জুলাই থেকে তিন মাস ছ’হাজার বাস-মিনিবাসকে প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এই অনুদান নিয়ে জট কাটেনি। উল্টে বিভাজনের প্রসঙ্গ টেনে সোমবার থেকে বাস তুলে নেয় মালিকদের একাংশ। আরও দুর্ভোগ বাড়ে যাত্রীদের।
কলকাতায় লকডাউনের আগে প্রায় সাত হাজার বাস-মিনিবাস চলত। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর, যত আসন, তত যাত্রী নিয়ে বাস চালাতে রাজি ছিলেন না মালিকেরা। ভাড়া বাড়ানোর দাবি ছিলই, তার পর লাগাতার ডিজেলির মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাস ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। সাকুল্য দু’হাজর বেসরকারি বাস-মিনিবাস নামছিল। গত সোমবার থেকে তা-ও উধাও।