বাড়তি বিলের বোঝা, ক্ষোভ সিইএসসি গ্রাহকদের
গত মাসে হাতে বিদ্যুৎ বিল পেয়েই চক্ষু চড়কগাছ বহু সিইএসসি গ্রাহকের। তাঁদের অভিযোগ, এপ্রিল বা মে মাসের তুলনায় বিলের অর্থাঙ্ক অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। কোনও কোনও গ্রাহকের ক্ষেত্রে তা দ্বিগুণ বা তিনগুণও হয়েছে বলে অভিযোগ। একই সমস্যায় এবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার গ্রাহকদেরও সম্মুখীন হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। বণ্টন সংস্থা আবার তিন মাস অন্তর বিল করে থাকে। তাই তাদের গ্রাহকদের ক্ষেত্রে বিল একলাফে আরও বেশি বেড়ে যেতে পারে।
এক মাসে হঠাৎ করে এতটা বিল বেড়ে যাওয়ায় অনেক গ্রাহকই ক্ষুব্ধ। তাঁরা অনেকেই সিইএসসি, এমনকী রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তরেও মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করেছেন। যদিও সিইএসসি-র তরফে জানানো হয়েছে, করোনা-লকডাউনের জন্যই কোনও কোনও গ্রাহকের এক মাসে বিল হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। কেন?
সংস্থার এক আধিকারিকের জানান, মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত করোনা-লকডাউন চলার জন্য সিইএসসি কোনও গ্রাহকের মিটার রিডিং করতে পারেনি। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘তাই পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, এপ্রিল ও মে মাসে তাঁদের যে বিল পাঠানো হয়েছে, তাতে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের তার আগের ছয় মাসের বিদ্যুৎ খরচের ইউনিটের গড় ধরে আমরা ইউনিট ধার্য করেছি। ওই ছয় মাসের মধ্যে গোটা শীতকাল থাকায় সাধারণত বিদ্যুৎ খরচ কম হয়, তাই এপ্রিল, মে-তে যত ইউনিট গ্রাহকের খরচ হয়, অধিকাশেরই বিলে তার থেকে কম ইউনিট এসেছে। জুন মাসের ৮ তারিখ থেকে মিটার রিডিং ফের আমরা শুরু করি। ওই রিডিংয়ে যে ইউনিট এসেছে, তার থেকে আগের দু’মাসের গ্রাহকের বিলে থাকা ইউনিট বাদ দিয়ে যে অতিরিক্ত ইউনিট থাকছে, তার উপর আমরা বিল পাঠিয়েছি।’ তাঁর সংযোজন, ‘এর ফলে অনেক গ্রাহকেরই ইউনিট সংশ্লিষ্ট মাসে যা থাকে, তার থেকে বেড়ে যেতে পারে। তাই বিলও বেশি টাকার আসাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে ইউনিট বেশি হলে উপরের স্ল্যাবে পড়ে গিয়ে গ্রাহককে যাতে বাড়তি মাসুল না দিতে হয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি।’
একই সমস্যার মুখে এবার বণ্টন সংস্থার গ্রাহকদেরও পড়াটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘সিইএসসি-র অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে আমি অভিযোগ পাওয়ার পর সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি। ওরা জানিয়েছে, লকডাউনের জন্য মিটার রিডিং না করতে পারাতেই এই সমস্যা হয়েছে। কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোনও নির্দিষ্ট মাসের মিটার রিডিং না করতে পারলে গ্রাহককে তার আগের ছয় মাসের ইউনিটের গড় ধরে ইউনিট খরচ হিসাব করে বিল পাঠাতে হয়। এই সমস্যা বণ্টন সংস্থার ক্ষেত্রেও হবে। মিটার রিডিং করে যে ইউনিট আসবে, তার থেকে আগের গড় ধরা ইউনিট বাদ দিয়ে গ্রাহকদের বিল পাঠানো হবে।’ যে যত বিদ্যুৎ পুড়িয়েছেন, তাঁকে তার জন্যই বিল দিতে হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।