চীনের বিরুদ্ধে ‘ডিজিটাল স্ট্রাইক’
উরি হামলার বদলা হিসেবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারত। এ বার দেশবাসীর তথ্য সুরক্ষিত করতে চীনের বিরুদ্ধে ‘ডিজিটাল স্ট্রাইক’ চালানো হয়েছে। চীনের ৫৯টি অ্যাপ ভারতে নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার এই যুক্তিই দিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের উদ্দেশে করা ভার্চুয়াল র্যালিতে রবিশঙ্কর বার বার একটা কথাই বুঝিয়ে দিলেন, সীমান্ত হোক বা ডিজিটাল তথ্য— সব ব্যাপারে সুরক্ষা দিতে বদ্ধপরিকর মোদী সরকার। সেই সঙ্গে যে কোনও আগ্রাসনের মুখের মতো জবাব দিতেও সিদ্ধহস্ত।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, ‘এখন শুধু দু’টো সি-র কথা শুনবেন— করোনাভাইরাস এবং চীন। আমরা শান্তি এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে বিশ্বাসী। কিন্তু কেউ যদি ভারতের দিকে খারাপ দৃষ্টি দেয়, আমরা মুখের মতো জবাব দেব। আমাদের ২০ জন জওয়ান যদি জীবন উৎসর্গ করে থাকেন, চীনের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা দ্বিগুণ। আর আপনারা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, ওরা (চীন) ওদের নিহত সেনার কোনও সংখ্যা প্রকাশ করেনি!’
সর্বদল বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ভারতমাতার দিকে কেউ চোখ তুলে তাকালে ফল ভুগতে হবে, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন আমাদের বীর সেনা। তার পরও ২০ জন সেনার শহিদ হওয়া নিয়ে বার বার বিরোধী প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে মোদীকে। বাংলার সভায় সেই প্রশ্নেরই জবাব দিলেন মোদীর বিশ্বস্ত মন্ত্রী। বললেন, ‘আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, উরি ও পুলওয়ামা হামলার পর আমরা কী ভাবে জবাব দিয়েছিলাম। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যখন বলছেন জওয়ানদের আত্মদান বিফলে যাবে না, তখন তার নিশ্চয়ই কোনও অর্থ রয়েছে। যা বলা হয়, তা করে দেখানোর সদিচ্ছা এই সরকারের রয়েছে। দেশবাসীর তথ্য সুরক্ষিত করতে ডিজিটাল স্ট্রাইক চালিয়েছে ভারত।’
টিকটকের মতো ৫৯টি অ্যাপ বন্ধ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান বলেছিলেন, কেন্দ্রের উচিত এই অ্যাপগুলির ভারতীয় বিকল্প খুঁজে বের করা, যাতে এই অ্যাপের সংশ্লিষ্ট লোকগুলি কাজ না হারান। এ দিন নুসরতের নাম না নিলেও তৃণমূলকে বিঁধেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘বাংলায় একটা অদ্ভুত প্রবণতা দেখতে পাচ্ছি। তৃণমূল আগে জিজ্ঞাসা করছিল, আমরা কেন অ্যাপ নিষিদ্ধ করছি না। এখন জানতে চাইছে, চীনা অ্যাপ কেন নিষিদ্ধ করা হল? এই কঠিন সময়ে তারা কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে দাঁড়াতে পারছে না?’
প্রসঙ্গত, চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করা নিয়ে এ দিন ভারতের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন কূটনীতিক নিকি হ্যালে। তাঁর কথায়, ‘টিকটকের মতো যে অ্যাপগুলির ভারতে বিপুল বাজার, সেগুলি ভারত নিষিদ্ধ করেছে দেখে ভালো লাগল। ভারত বারবার বুঝিয়ে দিচ্ছে, তারা চীনা আগ্রাসনের কাছে নতি স্বীকার করবে না।’ অ্যাপ নিষিদ্ধের প্রশংসা করেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো-ও।